সিঙ্গাপুর প্রবাসীরা লকডাউনে যেমন আছেন!


শতাব্দী আলম : সিঙ্গাপুরে প্রবাসী বাঙালিরা ৩ মাস যাবৎ লকডাউনে রয়েছেন। সিঙ্গাপুরের লকডাউন মানে লক্ড। কোনভাবেই আইন অমান্য করে ঘরের বের হবার সুযোগ নেই। বের হলেই জেল জরিমানা। তবে লকডাউনে থাকা বিদেশী শ্রমিকদের জন্য সিঙ্গাপুর সরকার প্রয়োজনীয় সবরকম সেবা নিশ্চিত করেছে।

আজ ২৫ জুন দুপুরে সিঙ্গাপুরে ৩ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর কাকি বুকিট এলাকার দা লিউ ডরমিটরিতে বসবাসরত কয়েকজন প্রবাসীর সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওতে কথা হয়।

তারা জানায়, আজ দুপুরেও প্রতিদিনের মত তাদের জন্য খাবার এসেছে। আজকের খাবারে ভাত, মুরগির রোষ্ট ও পায়েস পাঠানো হয়েছে। সাথে একটা ড্রাগন ফল। সকালে ছিলো রুটি আর হালুয়া। রাতেও রান্না করা খাবার পাঠানো হবে।

প্রবাসীরা জানান, 0৭ এপ্রিল লকডাউন শুরু হবার পর থেকে প্রতিদিন সরকারিভাবে তাদের খাবার পাঠানো হয়। তিন বেলাই সরকারি খাবার আসে। সপ্তাহে রোববার ও অন্য একদিন বিরিয়ানি দেয়া হয়। প্রতি ওয়াক্তে খাবারের সাথে আপেল, ড্রাগন, মাল্টা, কলা কোন না কোন ফল থাকে। ভোর ৬ টা, বেলা ১১ টা ও সন্ধা ৫-৬ টার মধ্যেই পরিবেশনকারী গাড়ি এসে সবাইকে মাইকে ডেকে খাবার পৌছে দিয়ে যায়।

প্রবাসীরা আরও জানায়, তাদের মাসিক বেতনও নিয়মিত দেয়া হচ্ছে। ওই ডরমিটরিতে পলিমার ইন্টারন্যাশন্যাল সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মচারী কর্মকর্তারা থাকেন। তাদের সকলের বেতন সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হচ্ছে। তবে আগামী জুলাই মাস থেকে বেতনের ২০ ভাগ কম দেবে। প্রবাসীরা জানায়, সকল বিদেশী শ্রমিকের জন্যই সিঙ্গাপুর সরকার এই ব্যবস্থা করেছে।

তারা জানায়, প্রবাসী শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য প্রতিটি ডরমিটরির সামনে ভ্রাম্যমান হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। তাদের ডরমিটরির ভ্রাম্যমান হাসপাতালে ৪০ জন চিকিৎসক ও সেবিকা দল কাজ করে। সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত চিকিৎসক দল ভ্রাম্যমান হাসপাতালে অবস্থান করে। তাছাড়া জরুরী সেবার জন্যও বিশেষ দল আছে।


তারা আরও জানায়, লকডাউনের শুরুতে এপ্রিল মাসে একবার প্রত্যেক শ্রমিকের করোনা টেষ্ট করা হয়েছে। আবার জুন মাসে দ্বিতীয়বার করা হচ্ছে।

প্রবাসীরা জানায়, তাদেরকে প্রতিমাসে ৫০ জিবি ফ্রি ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে সরকার।

প্রবাসীরা সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, লকডাউনে থাকা অবস্থায় সিঙ্গাপুরে প্রবাসী বাংলাদেশীসহ বিদেশী শ্রমিকের জন্য সিঙ্গাপুর সরকারের ব্যবস্থায় তারা অত্যন্ত ভাল আছেন। খাদ্য সহায়তা, চিকিৎসা সেবা, যোগাযোগের জন্য ইন্টারনেট সার্ভিস, নিয়মিত বেতন পরিশোধ সব কিছুই সঠিকভাবে করা হচ্ছে।

তারাও সিঙ্গাপুর সরকারের ঘোষিত সবরকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে লকডাউনে রয়েছেন। প্রবাসীরা সিঙ্গাপুরের লকডাউনে থেকে দেশে স্বজনদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগে বাংলাদেশের খবর পান। স্বজনদেরকে বাংলাদেশে লকডাউন পরিস্থিতিতে সরকারের সব রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন।

পিবিএ/এমএ

আরও পড়ুন...