সোহাগ হাসান জয়,সিরাজগঞ্জ: ১০ বছর আগে এক বিএনপি কর্মী হত্যার অভিযোগে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি ডা: হাবিবে মিল্লাত মুন্নাসহ আওয়ামী লীগের ৪৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
২৬ জানুয়ারী নিহত জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী রোজিনা খাতুন বাদী হয়ে কামারখন্দ আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। নিহত জাহাঙ্গীর হোসেন সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এস. এম নাজমুল ইসলাম জানান, আদালতের বিচারক কামারখন্দ থানাকে মামলাটি এজাহারভুক্ত করে তদন্তপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় ৪২জনের নাম উল্লেখ ও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামীরা হলেন, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ডা: হাবিবে মিল্লাত মুন্না, সদর উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন, সিরাজগঞ্জ পৌরসভার অপসারিত মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম শফি, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জানপুর মহল্লার মো: আলম, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আজিজল তালুকদার, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড: আব্দুল হাকিম ও সয়দাবাদ ইউপির অপসারিত চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নবীদুল ইসলাম।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বিএনপি কর্মী জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে আসামীদের রাজনৈতিক ও সামাজিক দ্বন্ধ ছিল। এ অবস্থায় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জানপুর মহল্লার মো: আলম ও সয়দাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুল ইসলাম রাজা জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা জাহাঙ্গীর হোসেনকে মারধর, হত্যা ও গুম করার পরিকল্পনা করতে থাকে। এ অবস্থায় ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে জাহাঙ্গীর হোসেনকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারী সয়দাবাদ ইউপির চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নবীদুল ইসলাম বাদীকে মোবাইল করে জানায় তোর স্¦ামীকে অপহরণ করেছি। তাকে জীবিত ফিরে পেতে চাইলে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। এ অবস্থায় ২০১৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী ও ৯ ফেব্রুয়ারী দুই দফায় নবীদুল ইসলামের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দেন বাদী। এরপরও জাহাঙ্গীর হোসেনকে মুক্ত করে দিতে আসামীরা তালবাহানা করতে থাকে।
এ অবস্থায় ১৫ ফেব্রুয়ারী সকালে বাদী জানতে পারেন কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ওভারব্রীজের দক্ষিন পাশে জাহাঙ্গীর হোসেনের মৃতদেহ পড়ে আছে। তাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। একই দিন ঝাঐল ইউপির দফাদার সচিন চন্দ্র দাস বাদী হয়ে এ ঘটনায় কামারখন্দ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশী তদন্ত শেষে আসামী সনাক্ত না করেই আদালতে মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ঘটনার পরই বাদী মামলা দায়ের করতে চাইলেও আসামীরা তাকেও হত্যার হুমকি দেওয়ায় ওই সময় মামলা দায়ের করতে পারেননি বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী।