সোহাগ হাসান,সিরাজগঞ্জ: পাহাড়ী ঢলে চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথম দিকে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। যমুনাসহ জেলার অভ্যান্তরীর্ণ নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়ে ১১ দিন বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত ছিলে। তলিয়ে যায় বিভিন্ন ফসলের খেত। ফলে কৃষি জমি পানি তলিয়ে থাকায় জেলার ৩৭ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এতে প্রায় ৬৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে অনেক কৃষক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। যদিও কৃষি বিভাগ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে তাদের সহযোগিতা করা হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বন্যায় সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলায় বন্যায় ৩৭ হাজার ৪৬ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যায় জেলায় ৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় ৩ হাজার ১৮৫ দশমিক ১ হেক্টর ফসলি জমি। এসব ফসলের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ৭৮ লাখ ৩ হাজার ১২৬ টাকা।
সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল মজিদ, রাজ্জাক, আব্দুল গফুর,আলতাব শেখসহ অনেকেই জানান, এবার জমিতে মিষ্টি লাউ, সিম, কুমড়া, পাটসহ বিভিন্ন চারা চাষ করা হয়েছিলো। বন্যায় পাটের তেমন ক্ষতি না হলেও বাকিসব চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৩৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, দেড় সপ্তাহ ধরে যমুনা নদীর পানি কমছে। এ মুহূর্তে যমুনায় পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের পাট, তিল, আউশ, আমন বীজতলা ও সবজিসহ অন্যান্য ৬ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। এর মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় ৩ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমির ফসল। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে কৃষকদের সহায়তার কথাও বলা হয়েছে।