সিরাজগঞ্জে সাবেক এমপি মুন্না-হেনরির বিরুদ্ধে তিন হত্যা মামলা

সোহাগ হাসান জয়,সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে তিন যুবদল নেতাকর্মী হত্যার ঘটনায় সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার, সাবেক সংসদ সদস্য ড. জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিনসহ জেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের ৪৬৩ জনের নাম উল্লেখ করে ৩টি পৃথক মামলা হয়েছে।

প্রতিটি মামলায় সাবেক এমপি অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সবগুলো মামলায় আসামি করা হয়েছে সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরীসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে। তিনটি মামলায় মোট ৪৬৩ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৪৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগষ্ট) রাতে প্রয়াত জেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রঞ্জু শেখের স্ত্রী মাছিমপুর মহল্লার মৌসুমি খাতুন, গয়লা মহল্লার যুবদলকর্মী নিহত আব্দুল লতিফের বোন মোছা. সালেহা বেগম ও একই মহল্লার নিহত সুমন শেখের বাবা গঞ্জের আলী শেখ বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় মামলা ৩টি মামলা দায়ের করেন।

শুক্রবার (২২ আগষ্ট) সকালে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। থানা পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সরকার পতনের ১ দফা দাবির প্রথম দিনে উল্লিখিত আসামিদের নির্দেশে বা ইন্ধনে বা সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের দলের অজ্ঞাত ৯ শতাধিক নেতাকর্মী গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে যুবদলের তিন নেতাকর্মীকে হত্যা করে।

মামলাগুলোতে ৪৬৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৪৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। মামলায় আসামীরা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আসামীরা হলেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার, সিরাজগঞ্জ সদর আসনের দুই বারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী সদ্য বিদায়ী সংসদ সদস্য ড. জান্নাত আরা হেনরী, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হোসেন আলী হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দানিউল হক মোল্লা, সিরাজগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সেলিম আহম্মেদ, সিরাজগঞ্জ বারের পিপি অ্যাড. আব্দুর রহমান, জিপি অ্যাড. রেজাউল করিম রাখাল, বিএম’এর সভাপতি ডা. জহুরুল হক রাজা সহ আরো অনেকে।

এদিকে ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশ ও সরকারদলীয়দের পৃথক সংঘর্ষে পুলিশসহ সিরাজগঞ্জে ৩২ জন নিহত হন। আন্দোলনের প্রথম দিনে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এনায়েতপুর থানায় অগ্নিসংযোগ ও পিটিয়ে ১৫ পুলিশকে হত্যা করে। নিহত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে একজন ওসি, পাঁচজন এসআই, একজন এএসআই এবং আটজন কনস্টেবল ছিলেন।

এ ছাড়া এনায়েতপুরে দুই শিক্ষার্থী শিহাব ও সিয়াম ছাড়াও ইব্রাহিম নামে এক তাঁত শ্রমিকসহ তিনজন নিহত হন। তিনটি হত্যার ঘটনায় এর আগে সাবেক এমপি মন্ডল গ্রুপের কর্ণধার আব্দুল মমিন মন্ডলসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় দেড় হাজার নেতা-কর্মীর নামে এনায়েতপুর থানায় তিনটি পৃথক মামলা হলেও পুলিশ হত্যাকাণ্ডে এখনও মামলা হয়নি।

আরও পড়ুন...