চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে (আইএইচটি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে চার শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি আগামী ১১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন মোফাসসেরুল কাদের, নিউমেন শর্মা, মোহাম্মদ নকিব ও নির্জন মজুমদার। তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সবাই আইএইচটির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী।
পুলিশ এবং আইএসটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের বিরোধের কারণে সংঘর্ষ হয়েছে।
আইএইচটি প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। এতে ছয়টি বিভাগে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্সে পাঠদান করানো হয়। এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭০০।
শিক্ষার্থী অমিত কৃষ্ণ দাস বলেন, আইএইচটিতে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের একটি সেমিনার হচ্ছিল। একদল লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে সেখানে হামলা চালায়। অন্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে তাঁদের ওপরও হামলা করে।
জানতে চাইলে আইএইচটি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন বলেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের প্রতিষ্ঠানের নারী শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করে আসছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাঁদের বাধা দিলে দলবল নিয়ে এসে হামলা চালান। বিষয়টি কলেজ প্রশাসন এবং পুলিশকে জানানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম আইএইচটির অষ্টম ব্যাচের ছাত্র। তিনি ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি। ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির নেতাদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ রয়েছে। আজ তিনি দলবল নিয়ে এসে হামলা চালালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, তিনি মারামারি মধ্যে ছিলেন না। একই ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারি হলে তিনি থামাতে গেছেন। উত্ত্যক্ত করার ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, তিনি এসবের সঙ্গে জড়িত নন।
ছাত্রলীগের দুই পক্ষই আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য এস এম আল মামুনের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন। জানতে চাইলে সংসদ সদস্য এস এম আল মামুন বলেন, ‘আইএইচটিতে মারামারি হয়েছে শুনেছি। এ ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছি।’
আইএইচটি সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আইএইচটির অধ্যক্ষ নূপুর কান্তি দাস বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলে আসছে। তারা একে অপরকে সহ্য করতে পারছে না। এর অংশ হিসেবে আজ একটি পক্ষ হামলা চালিয়েছে। ফলে তারা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মাসুদ হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যেই সংঘর্ষ হয়েছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি।