সীতাকুণ্ডে বন্ধুকে খুন করে নিজ ঘরে মাটি চাপা

পিবিএ,সীতাকুণ্ড(চট্রগ্রাম): চট্রগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার ফৌজদারহাট এলাকায় একটি ভাড়া বাসায়
এক বন্ধুকে খুন করে নিজ ঘরে মাটি চাপা দেওয়ার দুইদিন পর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শনিবার উপজেলার
ফৌজদারহাট এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের শ্রমিক নেতা মছিউদৌলার বাড়ির লাল মিয়ার ভাড়া বাসায় থেকে রাত ৯টার দিকে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পোষ্টমোটেমের জন্য প্রেরণ করে এবং ঘাতক খুনি রুমেন মিয়া (৩০) কে পুলিশ আটক করে।

জানা যায়,গত বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে বন্ধু মোঃ নুর উদ্দিন (৪৫)কে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে নিজঘরে গর্ত করে মাটি চাপা দেয় রুমেন মিয়া (৩০) নামের এক যুবক।তারা দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। গত এক বছর আগে রুমেন নামের এক যুবককে তার ঘরে এনে আশ্রয় দেয় নুরুউদদিন।রুমেন পেশায় একজন রিক্সা চালক
,নুর উদ্দিন তার স্ত্রীকে সৎ ভাই হিসেবে পরিচয় করে দেয়।রুমেন প্রায় এক বছর ধরে নুর উদ্দিনের ঘরে থেকে রিক্সা চালাতো।খাওয়া ও থাকা নিয়ে সে মাসে মাসে নুর উদ্দিনকে খরচ দিতো।তবে গত রমজানের পর থেকে রুমেন নুর উদ্দিনকে খরচ দেয়া বন্ধ করে দেয়।এনিয়ে মাঝে মাঝে দুই জনের মধ্যে তর্ক-বির্তক হতো।

নুর উদ্দিনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান,গত বৃহস্পতিবার দুপুরে এ নিয়ে আমার স্বামীর সাথে রুমেনের ঝাগড়া হয়।ঝগড়ার এক পর্যায়ে আমার স্বামী রুমেনকে মারার জন্য উদ্যত হয়। এসময় একজন আরেক জনকে খুন করবে বলেও হুমকি দেয়।তারা দুইজন এক রুমে ঘুমাতো আমি আরেক রুমে ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঘুমাতাম।

ঘটনার দিন রাতে দুইজনই ঘুমাতে যায়। রাত ১ টার দিকে পাশের রুম থেকে শব্দ আসায় আমি গিয়ে দেখি আমার স্বামীকে ঘুমের মধ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে খুন করছে।ঐ সময়ে আমি রুমেনের দুই পা জড়িয়ে ধরে প্রাণ ভিক্ষা চাই।মুখ না খোলার জন্য এসময় সে আমাকে এবং আমার দুই ছেলে মেয়েকেও খুন করবে বলে হুমকি দেয়।

যদি এই খুনের ব্যাপারে কাউকে বলি তাহলে আমাদেরকেও খুন করবে জানায় রোমেন।রাতে সে পাশের আরেকটা মুরগী রাখার ঘরে গর্ত করে মাটিতে লাশ চাপা দেয়।এরপর সে শুক্রবার ও শনিবার সারাদিন স্বাভাবিকভাবে রিকসা চালায়।আমি আর সহ্য করতে না পেরে শনিবার রাতে আমি বিষয়টি আমাদের ভাড়া ঘরের মালিককে জানায়।

খুন হওয়ার ঘটনা জানান পর কয়েকজন মিলে রুমেনকে আটক করে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তাকিম আরজুকে জানালে তিনি বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানান, চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আজিজ উক্ত বিষয়টি থানাকে অবহিত করলে প্রথমে ফৌজদারহাট ফাঁড়ির এসআই নুর নবী ঘটনাস্থলে হাজির হয়।এবং খুনি রুমেন পুলিশের কাছে নুর উদ্দিন হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

খবর পেয়ে রাতে সহকারী পুলিশ সুপার (সীতাকুণ্ড সার্কেল) শম্পা রানী, মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লা এবং ওসি (তদন্ত) সুমন বনিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

এসময় আটক খুনি রুমেনের স্বীকারোক্তিতে মাঠিতে পুঁতে ফেলা লাশ উদ্ধার করে।পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি ধারালো ছুরি এবং মাটি খোঁড়ার বেলচা উদ্ধার করে।

নিহত নুর উদ্দিন উপজেলার কেশবপুরের নুরুল হকের পুত্র। রুমেন মিয়া হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার পাইকপাড়া গ্রামের রমজান আলীর পুত্র।

এব্যাপারে মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বনিক বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যানের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক আসামী রুমেন মিয়ার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ঘরের ভিতর থেকে মাটি খুঁড়ে লাশটি উদ্ধার করে পোষ্টমোটেমের জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিবিএ/এসডি

আরও পড়ুন...