সুনামগঞ্জে খোলা আকাশের নিচে শতাধিক পরিবার

পিবিএ,সিলেট: সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে বসতবাড়ি বিধ্বস্থ হওয়ায় মাথা গোজার ঠাঁই হারিয়েছেন শতাধিক পরিবারের লোকজন।
আকস্মিক ঝড়ের তান্ডবে মাথা গোজার বসতঘর বিধ্বস্থ হওয়ায় গত তিন দিন ধরে খোলা আকাশের নিচেই বসবাস করতে হচ্ছে শতাধিক পরিবারের লোকজনকে ।

জানা গেছে, সোমবার সকালে তীব্র গতিতে বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড় ও শীলাবৃষ্টির কবলে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৫ শতাধিক কাঁচা, আধা পাঁকা বসতঘর ও গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আকস্মিক ঝড়ের তান্ডবে উড়ে গেছে নি¤œ আয়ের অধিকাংশ পরিবারের লোকজনের মাথাগোজার ঠাই বসতঘরটিও বিধ্বস্থ হয়ে মিশে গেছে মাটির সাথে।

ঝড়ে লন্ডভন্ড হওয়ায় বসতবাড়ি হারানো লোকজন বাঁশ, খড়, পলিথিনের ছাউনী দিয়ে তৈরী করা ঘরবাড়িতে মাথা গোজার জন্য চেষ্টা করলেও ফের মঙ্গলবার রাতে বয়ে চলা ঝড়ে আবারো বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছেন লোকজন। বুধবার সকাল থেকেই ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের লোকজন খোলা আকাশের নিচেই নিরাপত্তাহীনভাবে বসবাস করছেন।
ঝড়ের পাশাপাশি শীলাবৃষ্টিতে ওই উপজেলার একাধিক হাওরের পাকা বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই। শীলাবৃষ্টি পড়ায় পাকা ধান ঝড়ে গেছে গুছি থেকে । এখন এসব হাওরে এই ধান কাঁটতে নারাজ ধাওয়ালীরা।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য অনুযায়ি কালবৈশাখী ঝড়ে কবলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচশতাধিক কাচা পাকা বসতবাড়ি।
ইতোমধ্যেই ইউনিয়ন অনুযায়ি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের তালিকা তৈরী করে স্থানীয় সংসদ সদস্য , জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রী সহ জেলা প্রশাসক বরাবরে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

ঝড়ের কবলে উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের ৬০ বছর বয়সী বুইদ্ধা মিয়ার বসতবাড়ি বিধ্বস্থ হওয়ায় কাপর ও পলিথিন দিয়ে পরিবারের লোকজন নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন ।
এ বৃদ্ধের মতো বসতঘর হারিয়েছেন রেশন বিবি, নতুন বাবন গাঁয়ের রবউল্লাহ, খেলাই মিয়া, জুনেল মিয়া, সেলঙ্গীর আহমদ, ময়না মিয়া, ফেরদৌস আহমদ, জুবায়েল আহমেদ সহ শলফ, ধরমপুর গ্রামের অসংখ্য পরিবার। এসব পরিবারের নারী শিশুরা খোলা আকাশের মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ঝড়ের তান্ডবে প্রতিবেশির গাছ পড়ে ভেঙ্গে গেছে বীরগাঁও গ্রামের খালপাড়ের মখদ্দুস আলী ও ওয়াহাবুল্লাহর মিয়ার বসতঘর।
উপজেলার শিমলবাঁক গ্রামের কাচামালা বিবি, মালা বিবি, নেজামুল ইসলাম, আবিদ মিয়া, রগুনাথপুর গ্রামের মহিবুর রহমান, চেরাগ আলী, শহীদুল ইসলাম, আকবর আলী, মাসুক মিয়া, গবিন্দপুর গ্রামের সোহেল মিয়া, ময়না মিয়াসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অসংখ্য পরিবারের বসত ঘর। কারো সম্পূর্ণ ঘর, কারো ঘরের ছাউনী পড়ে গেছে। ভেঙ্গেগেছে বাড়ীর বড় বড় গাছ। ঝড়ের হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও মাথাগোজার ঠাই না থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার।

বুধবার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সফিউল্লাহ জানান, সোমবারের ও মঙ্গলবার রাতের দু’দফা কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার ৫ শতাধিক ঘরবাড়ির ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি ও জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবরে পাঠানো হয়েছে।,

পিবিএ/হাস/হক

আরও পড়ুন...