সুবর্ণচরে সয়াবিন ক্ষেতে কৃষকের হাসি

noakhali soiabinপিবিএ,নোয়াখালী: কৃষি অধ্যুষিত নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় চলমান কৃষি মৌসুমে সয়াবিন চাষ করে হাসি এনেছে কৃষকের মুখে। সয়াবিন চাষ করে এক দিকে যেমন কৃষকদের মুখে হাসি অন্য দিকে দুর দুরান্ত থেকে সয়াবিন ক্ষেত দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছে ভ্রমণ পিপাসুরা। ফুলের মৌ মৌ সুগন্ধ ছড়িয়ে আশেপাশের চারদিকে। বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ যেনো হলুদ ঢাকা। দেখে মনে হয় কেউ যেনো সবুজ ফসলের মাঠে হলুদ চাদর বিছিয়ে রেখেছে। চৈত্রের রৌদে মাঠে সয়াবিন ফুলের হলুদ ফুলগুলোর অমোঘ ঘ্রাণে প্রাণ জুড়িয়ে যায় পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।
জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর, চরবাটা, চরক্লার্ক, চরওয়াপদা, চর জুবলী, পূর্ব চরবাটা, মোহাম্মদপুর ও চর আমানুল্লাহ ইউনিয়ন ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহীতে বিস্থীর্ণ চরাঞ্চলে এবার সয়াবিনের ব্যাপক চাষাবাদ হয়েছে। স্বল্প খরচ ও পরিশ্রমে ভালো ফলন হওয়ায় এ শস্যকে স্থানীয় কৃষকেরা ‘সোনার ফসল’ বা ‘ভাগ্য বদলের ফসল’ বলে মনে করে থাকেন। কারণ এ ফসল তাদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে, এনে দিয়েছে আর্থিক সচ্ছলতা।
বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার এ এলাকা গুলোতে সয়াবিনের চাষ যেমন বেশি হয়েছে, তেমনি বাম্পার ফলন হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে চরাঞ্চলের ঘরে ঘরে বইছে আনন্দের জোয়ার।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সয়াবিনকে ঘিরে সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা, খাসেরহাট ও আনছার মিয়ারহাট বাজারে ৩০/৪০টি এবং হালিম বাজার, আক্তার মিয়ারহাট, আবদুল্লাহ মিয়ার হাটে ২০টি পাইকারি দোকান গড়ে উঠেছে। রয়েছে বেশ কয়েকটি চাতালও। দেশের বড় বড় সয়াবিন তেল ও পোল্ট্রি খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখান থেকে সয়াবিন সংগ্রহ করে থাকে।

এ ব্যাপারে হোসেন মিয়া নামের এক কৃষক জানান, গত বছর ছয় একর জমিতে সয়াবিন চাষ করতে তার মোট ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। আর তিনি ফলন পেয়েছিলেন ১২০মণ। যা বিক্রি করে (প্রতিমণ এক হাজার ২০০ টাকা) তিনি মোট এক লাখ ৪০ হাজার টাকা আয় করেছিলেন। এতে তার লাভ হয়েছে এক লাখ ১০ হাজার টাকা।
এদিকে, এ বছর ১ মণ সয়াবিন ১৩/১৪শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাই এবার লাভও অনেক বেশি হবে বলে জানান।
এ ব্যাপারে সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, সুবর্ণচরে এবার বেশ ভাল সয়াবিন ফলন হয়েছে। বেশিরভাগ জমিতে চাষ হয়েছে উন্নত ফলন জাতের সয়াবিন। উর্বর জমি ও সল্প খরচের কারণে উপজেলার বেশিরভাগ কৃষক পরিবার সয়াবিন চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। এ বছর অধিকাংশ কৃষক সয়াবিন চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রত্যাশা করছেন।

জেলা কৃষি কর্মকর্তা পিবিএ’কে জানান, ১৯৯৩ সালে এ উপজেলায় প্রথম সয়াবিনের চাষ শুরু হয়। এসব চরাঞ্চলের মাটি দোআঁশ মাটি হওয়ায় জমিগুলো সয়াবিন চাষের জন্য বেশ উপযোগী। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং খেতে রোগ-বালাই কম হওয়ায় বাম্পার ফলন হবে বলেও আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তা।

পিবিএ/ইএন/হক

আরও পড়ুন...