সেই দ্বন্দ্বই কাল হলো সাঈদ খোকনের!

মেয়র সাঈদ খোকন: ফাইল ছবি

পিবিএ,ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাননি বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকন। তার বদলে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপসকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলীয় বিভিন্ন সূত্র বলছে, মেয়র হিসেবে তার ব্যর্থতাকেই বড় করে দেখা হয়েছে। ফলে তাকে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেয়ার চিন্তা করেনি দল।

অন্যদিকে কেউ কেউ মনে করছেন, দগদগে ক্ষতের মতো একটি দলীয় দ্বন্দ্ব কাঁধে করে বয়ে বেড়াচ্ছিলেন সাঈদ খোকন। সেই দ্বন্দ্বই তার জন্য কাল হয়েছে।

পেছন ফিরে তাকালে দেখা যায়, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিলেন মেয়র সাঈদ খোকন। এর ফলে ঢাকা মহনগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর একটি অংশ তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে চলে যায়। অবিভক্ত ঢাকার সময় থেকেই এ দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো। ২০১৫ সালের নির্বাচনে সাঈদ খোকন দক্ষিণের মেয়র নির্বাচিত হলেও এই দ্বন্দ্বের অবসান হয়নি। উল্টো আরও জটিল হয়েছে। গত ৫ বছরে এই দ্বন্দ্ব কখনও কখনও প্রকাশ্য রূপ নেয় । দুই বছর আগে আজিমপুরে ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক কর্মসূচি পণ্ড করে দেওয়ার ঘটনায় সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, রাজধানীর রাজনীতির কেন্দ্র বিন্দু হচ্ছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। রাজনীতির মাঠকে পক্ষে রাখার জন্য ঢাকা মহানগরীর এই অংশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই দক্ষিণ সিটিকে হাতছাড়া করতে চায় না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই নির্বাচনে বিজয়ী হতে হলে প্রথমেই দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে রাখা জরুরি। ঢাকা মহানগরে দলীয় রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের যেসব নেতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব রয়েছে তাদের অনেকের সঙ্গেই সাঈদ খোকনের দূরত্ব রয়ে গেছে । ফলে তার পক্ষে সবাইকে মাঠে নামানোর বিষয়টি কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে দল বিকল্প খুঁজতে থাকে।

বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপসকে মনোনয়ন দিলে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী তার পক্ষে মাঠে নামবেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা তাপসকেই উপযুক্ত মনে করেছেন বলে মনে করেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

তাছাড়া মেয়র সাঈদ খোকনের বাদ পড়ার আরও অনেক কারণ আছে। মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ৫ বছরে তিনি বেশ কিছু সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন। বিশেষ করে চলতি বছর রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রভাব বেড়ে যায়। ডেঙ্গু মোকাবিলায় তিনি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারেননি। উল্টো বিভিন্ন ধরনের বেফাঁস বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত হয়েছেন। এছাড়া দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকা যানজটমুক্ত করার প্রতিশ্রুতিসহ নির্বাচনের আগে ও পরে তিনি যে সব প্রতিশ্রতি দিয়েছিলেন তা বস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন। এ কারণে তিনি দলেরও মধ্যে বিতর্কিত হয়েছেন। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ মনে করেছে, তাকে জিতিয়ে আনা সহজ হবে না।

পিবিএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...