সেতুটি নির্মাণের কারণ জানেন না গ্রামবাসী

 

আরিফুল ইসলাম সুমন, পিবিএ, সরাইল: দুই পাশে কোনো রাস্তা নেই, নিচে মরা খাল। পশ্চিমপাশে ধানী ফসলি মাঠ। উত্তরপাশে সবজি চাষাবাদ জমি। দক্ষিণে জনবসতি। পূর্বে সরকারি পানি নিস্কাশনের নালা। এর মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে সেতু। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর তত্বাবধানে ‘হাওর অঞ্চলের অবকাঠামো ও জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প’ (হিলিপ) বরাদ্দের ৩২ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে পাঁচ বছর আগে এই সেতু নির্মাণ হয় বলে জানা গেছে। এটি নির্মিত হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের দক্ষিণ কালীকচ্ছ গ্রামের ঘোষপাড়া এলাকায়।

এলাকাবাসী জানান, এই স্থানে সেতু নির্মাণের কারণ তারা খুঁজে পাননি। সেতুটি তাদের কোনো উপকারে আসবে না। দুইপাশে সড়ক না থাকায় আজ পর্যন্ত সেতুর ওপর কেউ উঠতে পারেনি। সেতুর একপ্রান্তে নালা, অপরপ্রান্তে ব্যক্তি মালিকানাধীন চাষাবাদ জমি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য অরবিন্দ দত্ত বলেন, দুইপাশে রাস্তা নেই, অথচ লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এখানে খালের উপর সেতু নির্মান করা হয়েছে। অনুমান তিন’শ গজ দক্ষিণে সেতুটি নির্মান করলে, স্থানীয় লোকজন উপকৃত হতেন। সেখানে খালের দুইপাশেই সরকারি রাস্তা ছিল। হিন্দু সম্প্রদায়ের শশ্মানঘাটও ছিল।

কালীকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত আলী বলেন, হিলিপ প্রকল্পের ৩২ লক্ষাধিক টাকার সেতু এখন স্থানীয় লোকজনের ‘দুই পয়সার কাজে আসছে না”। সেই সেতুর দুইপাশে সড়ক ই নেই।

এ ব্যাপারে জানতে সরাইল এলজিইডি কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে উপ-সহকারি প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল বাকি বলেন, হিলিপ প্রজক্টের ৩২ লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দে সেই সেতু নির্মাণ করে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। তৎকালীন উপ-সহকারি প্রকৌশলী নুরুন্নাহার বেগম এ কাজের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। বিষয়টি তিনিই ভালো জানেন। বর্তমানে তিনি বদলী হয়ে এলজিইডি’র প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে এলজিইডি’র প্রধান কার্যালয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে উপ-সহকারি প্রকৌশলী নুরুন্নাহার বেগম এ প্রতিবেদককে বলেন, অনুমান পাঁচ বছর আগে হিলিপ প্রকল্পের সেই সেতু নির্মাণ হয়। আমি সরাইলে কর্মরত থাকা অবস্থায় ঠিকাদারকে সেই সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়কের বিল প্রদান করিনি। ঠিকাদার অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করতে গেলেও মাটির অভাবে সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও বলেন, যেখানে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে সেতুর দুইপাশে সড়ক নেই। সড়ক নির্মাণ না হলে এ সেতু মানুষের কোনো কাজেই আসবে না। তৎকালীন স্থানীয় সাংসদ ও তাঁর ছেলের তদবির -চেষ্টায় সেখানে এই সেতু নির্মাণ হয়। নইলে দুইপাশে রাস্তাবিহীন স্থানে সেতু নির্মাণ হওয়ার কথা নয়। তাঁরা কথা দিয়েছিলেন সেতু নির্মাণের পর, জনসাধারণের চলাচলে দুইপাশে সড়ক নির্মাণ করে দিবেন।
পিবিএ/সুমন/জেডআই

আরও পড়ুন...