পিবিএ, মো: জাকির হোসেন, সৈয়দপুর (নীলফামারী): নীলফামারীর সৈয়দপুরের পল্লীতে নিজ ভেড়ার খামারে স্বামী-স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে শহরজুড়ে ব্যানার লাগানো হয়েছে। ৪ ফেব্র“য়ারী রাতে শহরের প্রায় ১০টি পয়েন্টে এসব ব্যানার লাগানো হয়। সৈয়দপুরবাসীর সৌজন্যে লাগানো এ ব্যানারে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতরা চিহ্নিত হলেও তাদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছেনা সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলে অনতিবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করা হয়েছে।
সৈয়দপুরে চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী এ হত্যাকান্ডের ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও হত্যাকারীদের কাউকে গ্রেফতার না করায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে নিহতের পরিবারের লোকজন। হত্যাকান্ডে জড়িতদের পরিচয় সনাক্ত হলেও চিহ্নিতরা আইনের আওতায় না আসায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন তারা। একারণে তারা প্রশাসনের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন।
মামলার বাদি নিহতদের ছেলে সোহেল রানা আক্ষেপ করে বলেন, খুবই পরিকল্পিতভাবে ও অত্যন্ত নৃশংসতার সাথে আমার বাবা-মাকে হত্যা করা হলেও পুলিশ তথা প্রশাসন একেবারে নির্বিকার। যেন কোথাও কিছুই হয়নি। তাদের আচরণে আমাদের মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে যে আদৌ আমরা আমাদের পিতা-মাতার হত্যার বিচার পাবো কি না। কেননা পুলিশ আসামী ধরার ক্ষেত্রে বিন্দু মাত্র আগ্রহ দেখাচ্ছেনা। বরং হত্যাকান্ডের মোটিভ পরিবর্তন করে কেয়ার টেকারকে বলির পাঠা বানিয়ে অন্যান্যদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা। কারণ কেয়ার টেকারের একার পক্ষে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত করা কখনই সম্ভবপর নয়। এক্ষেত্রে অন্তত:পক্ষে আরও ৪/৫ জন জড়িত। যাদের আমরা মামলার এজাহারে আসামী করেছি। কিন্তু তাদেরকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছেন। অথচ তাদেরকে আটক পূর্বক রিমান্ডে নিলেই মূলত: প্রকৃত আসামী সনাক্ত করা সম্ভব হবে। তাই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচারের জন্য এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের বালাপাড়া গ্রামে হাজী আসলামের জমি লিজ নিয়ে গড়ে তোলা ভেড়ার খামারে গত ২৬ জানুয়ারী দিবাগত রাত আনুমানিক ১ টা থেকে ভোর ৭ টার মধ্যে খামারের মালিক পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী মো: নজরুল ইসলাম (৬৫) ও তার স্ত্রী সালমা বেগম (৫৫) কে এলোপাথারী কুপিয়ে আহত করার পর গলা ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করে দূর্বত্তরা। এসময় কেয়ার টেকার আব্দুর রাজ্জাকও গুরুত্বরভাবে জখম হয়। পরের দিন সকাল ৮টায় এলাকাবাসীসূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে এবং কেয়ারটেকারকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ওইদিন ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৬ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় ২৮ জানুয়ারী ৪ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। আসামীরা হলো- কেয়ার টেকার আব্দুর রাজ্জাক, খামারের জমির মালিক হাজী আসলামের ছেলে সজল, তার বন্ধু সুজাত, কাউয়া। কেয়ার টেকার আব্দুর রাজ্জাককে পুলিশী হেফাজতে রেখে চিকিৎসা করা হলেও অন্য আসামীদের কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি।
পিবিএ/জেএইচ/জেডআই