সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো হয়েছেন গুলিতে হাত-পা হারানো আহতরা

কারো পা নেই, কারো হাত নেই, কারো পায়ে ব্যান্ডেজ; কেউ ক্র্যাচে আবার কেউ এসেছেন প্রিয়জনের কাঁধে ভর করে। এদের মধ্যে অনেকে ছিলেন দীর্ঘদিন গুমের শিকার। শুধু তারাই নন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ভিন্নমতের কারণে অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এমন শক শত মানুষ। তাদের মধ্যে শতাধিক ব্যক্তি আজ জড়ো হয়েছেন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।

মঙ্গলবার দুপুর থেকে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গঠন করা সংগঠন মায়ের ডাকের আয়োজনে গণজমায়েতে এসেছেন তারা।

জুলাইয়ে আন্দোলনের সময়ে পুলিশের গুলিতে আহত আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি সাধারণ একটি মিছিলে অংশ নিয়েছিলাম। সেখানে হঠাৎ করেই পুলিশ গুলি করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পায়ে বুলেট লাগে। আমার কোনো অপরাধ ছিল না। তারপরও কেন আমাকে গুলি করা হলো? এখনও এই পা নিয়ে আমি কষ্ট করছি। কোনো অপরাধ না করেও সারা জীবন আমাকে কষ্ট করতে হবে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।

আব্দুস সোবহান নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে খুব কাছ থেকে আমাকে গুলি করা হয়েছে। অথচ আমি কোনো অপরাধই করিনি। শুধু তাই নয়, এরপরও দীর্ঘদিন আমাকে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। গণতান্ত্রিক দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা উচিত নয়।

মায়ের ডাক সংগঠনের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে জুলুমের শিকার ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা এখানে জড়ো হয়েছেন। এখান থেকে আমরা পিলখানা হত্যাকাণ্ড, পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম, জুলাই গণহত্যা, শাপলা চত্বরে গণহত্যা, ক্রসফায়ার ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত নির্বিচারে নির্যাতন চালানো হয়েছে। অসংখ্য মানুষ এখনও পরিবারের কাছে ফেরেননি। এমনকি তারা কোথায় আছেন, কেমন আছেন সেটিও জানা যায়নি। আমরা গুম হওয়া মানুষদের অবস্থান জানতে চাই। দীর্ঘদিন ধরে যে জুলুম নির্যাতন ভিন্ন মতের মানুষের ওপর চালানো হয়েছে তার বিচার করতে হবে।

গণজমায়েতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, যুগ্মমহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, জামায়াত ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, আমার বাংলাদেশ পার্টির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মঞ্জু প্রমুখ উপস্থিত হয়েছেন।

আরও পড়ুন...