পিবিএ, নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে জ্বিন তাড়ানোর নামে ৮ম শ্রেনীর ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে মসজিদের ইমামকে।
গত রোববার রাতে সাকিব আলী (৩০) নামে ওই ইমামকে আটক করে সৈয়দপুর থানা পুলিশ। ওইদিন রাতেই ধর্ষিতার পিতার দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত ওই ইমামকে গ্রেফতার দেখিয়ে পরদিন সোমবার তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
এ ঘটনা ঘটে সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হুগলী পাড়া গ্রামে। অভিযুক্ত ধর্ষক সাকিব আলী ওই এলাকার হুগলীপাড়া জামে মসজিদের ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছিল। সে রংপুর মহানগরের জানপুর এলাকার মৃত মোসলেম উদ্দিনের পুত্র।
মামলার আরজি ও এলাকার সুত্র জানায়, ওই ইমাম মসজিদ সংলগ্ন লুৎফর রহমানের বাসায় বসবাস করতো। তার প্রতিদিনের খাবার দাবার ওই এলাকার বাসিন্দারা সরবরাহ করে আসছিল। কয়েকদিন আগে ইমামকে খাবার দিতে গেলে হুগলী পাড়ার জয়নাল আবেদীনকে বলা হয় তার স্কুল পড়ুয়া কন্যার (১৪) ওপর জ্বিনের ছাঁয়া পড়েছে। তাই তাঁকে জ্বিন থেকে মুক্ত করতে হলে ঝাঁড়-ফুক করাতে হবে।
ইমামের এ কথায় ওই ছাত্রীর বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পরবর্তিতে মসজিদেরর ইমাম সাকিব আলীর কথামত ঝাঁড়-ফুঁক করানোর জন্য স্কুল ছাত্রী কন্যাকে ইমামের কাছে পাঠায়। ইমাম প্রথম দফায় ওই ছাত্রীকে ঘরের বিছানায় বসিয়ে ঝাড়-ফুক করে।
এ সময় পরিবারের সকল সদস্যকে বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে বাড়ির বাইরে অবস্থান করতে বাধ্য করে ইমাম। পরে আবারও ইমাম গত রোববার ঘরের মধ্যে নিয়ে যায় ওই মেয়েকে। এসময় বাড়ির লোকজনকে বাইরে থাকতে বলা হয়। ঝাঁড়-ফুঁকের নামে লম্পট ইমাম অসামাজিক কাজে লিপ্তের সময় মেয়েটির চিৎকারে বাড়ির লোকজন ঘরে প্রবেশ করে ধর্ষনের বিষয়টি জানতে পায়।
এ সময় এলাকাবাসী থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ওই ইমামকে আটক করে। রাতেই মেয়েটির বাবা জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করে। পরদিন সোমবার ইমামকে জেলহাজতে প্রেরন করে।
এদিকে মঙ্গলবার (১৩ আগষ্ট) মেয়েটির ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে ওই পরীক্ষা করা হয়। সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আবুল হাসনাত খান জানান, ঘটনার বিবরণ জানতে ওই স্কুল ছাত্রীর জবাবনবন্দী রেকর্ড করা হয়েছে। আর জিজ্ঞাসাবাদে ইমাম সাকিব আলীও ঝাঁড়-ফুঁকের নামে মেয়েটিকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।
পিবিএ/ইকে