স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ আলাদিনের চেরাগ না যে সুইচ টিপলেই হয়ে যাবে: পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী

পিবিএ,সিলেট: পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি বলেছেন, ‘হাওরের বোরো ফসল রক্ষায় একদিনে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব নয়। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ আলাদিনের চেরাগ না যে সুইচ টিপলেই হয়ে যাবে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে সময় লাগবে।’
বুধবার সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলার বিভিন্ন বোরো ফসলী বাঁধ পরিদর্মনকালে তিনি এসব কথা বলেন ।একই দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত স্পীডবোট যোগে সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনার বিভিন্ন উপজেলার একাধিক হাওরের বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী।

স্থায়ী ফসলরক্ষা বাঁধের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হাওরে বাঁধ নির্মাণ করে পর্যবেক্ষণ করে দেখছি আজ যেখানে বাঁধ দেওয়া হলো সেটি আগামী বছর টিকছে কি না। যদি বাঁধ টিকে যায় তাহলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে। বোরো ফসল রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে সময় লাগবে। এটি এক বছর বা একদিনে হবে না। স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করছি। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে অনেক টাকা দরকার। আগে যে কাজগুলো হয়নি আমরা সেগুলো করছি। বাঁধে জিও টেক্সটাইলের ব্যাগ ও ব্লক ফেলা হচ্ছে। আগামী বছরের মধ্যে আমরা আরও ভালো অবস্থানে পৌঁছাতে পারবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘সীমান্তের ওপাড়ে যখন বর্ষা হয়, পাহাড়ি পানির ঢল যখন নামে, তখন কোন কিছুতে পানি ঠেকানো যায় না। ঢলের পানি বাঁধের ওপর দিয়ে চলে আসে। হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ ৬ দশমিক ৫ ফুট উচ্চতার পানি ঠেকাতে পারবে। কিন্তু অনেক জায়গায় ৭ থেকে ৮ ফুট উচু করে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে।
২০১৭ সালের মতো ঢল নামলে পানি ওপর দিয়ে চলে আসবে। বন্যায় সব ফসল প্লাবিত হয়ে যাবে। আমাদের লক্ষ্য হলো ফসল তোলার আগে পর্যন্ত পানি ঠেকিয়ে রাখা। ফসল মানুষের ঘরে উঠে গেলে আমাদের বাঁধ নির্মাণ স্বার্থক হয়।’
প্রতিমন্ত্রী ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ ও তাহিরপুর উপজেলার চন্দ্রসোনার থাল, জয়ধুনা, ধানকুনিয়া ও হালির হাওরের ফসল এবং নেত্রকোনা জেলার ডিঙ্গাপুতা হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেন।
এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মাহফুজুর রহমান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মন্টু কুমার বিশ্বাস, সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক ভুইয়া, খুশিমোহন সরকারসহ জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, ৯৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যায়ে চলতি বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে কাবিটা কর্মসূচির আওতায় সুনামগঞ্জের ৪২টি হাওরে ৫৭২টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে ৪৫০ কিলোমিটার বোরো ফসল রক্ষাবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায় চলতি বোরো মৌসুমে সারা জেলায় ২ লাখ ২৪ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড, উফশি ও স্থানীয় জাতের বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে।
এতে ১৪ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হওয়ার কথা। যার বাজার মূল্য হবে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা। এসব বাঁধের মধ্যে সুনামগঞ্জ পওর (পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ)-১ এর অধীনে ১৯৮ কিলোমিটার ও পওর-২ এর অধীনে ২৫২ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়।

পিবিএ/এইচএস/হক

আরও পড়ুন...