পিবিএ,ডেস্ক: বর্ষপঞ্জি থেকে বিদায় নিল ২০১৮ সাল। এলো নতুন বছর ২০১৯ সাল। জীর্ণ পুরনো ধুয়ে-মুছে যাক বলে আমরা শুরু করব নতুন বছরে নতুন পথচলা। পুরনো বছরে অনেক ব্যর্থতা ছিল, আবার ছিল অনেক সাফল্যও। ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন বছরে আমাদের নবযাত্রা আরো সফল হবে, এমনটাই প্রত্যাশা সবার। শুভ হোক, সুন্দর হোক নতুন বছর। স্বাগত ২০১৯ সাল।
২০১৮ সালে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ছিল শান্তিপূর্ণ। বছরের শেষ মাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আবারও সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। ২০১৮ সালে অবকাঠামো উন্নয়নে বড় বড় কাজ হয়েছে। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেলের মতো মেগা প্রজেক্টের কাজ এগিয়েছে দ্রুতগতিতে। দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ কক্ষপথে উেক্ষপণ করা হয়েছে। তৃতীয় বৃহত্তম সামুদ্রিক বন্দর পায়রা সমুদ্রবন্দরের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেন করা হয়েছে। রূপপুরে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। টানা দুই বছর প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশের ওপর। মাথাপিছু আয় এক হাজার ৭৫০ ডলার ছাড়িয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ ক্রমেই বাড়ছে। ফলে কর্মসংস্থানের উন্নতি হচ্ছে, বেকারত্ব কমে আসছে এবং দারিদ্র্যের হারও কমছে। একদিন যাঁরা বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে অবজ্ঞা করতেন তাঁরাই আজ বাংলাদেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স কাউন্সিলের পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশসহ ‘নেক্সট ইলেভেন’ভুক্ত দেশগুলোর অর্থনীতি ইউরোপের ২৭ দেশের অর্থনীতিকে ছাড়িয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগ সংস্থা জেপি মর্গান বাংলাদেশকে ‘ফ্রন্টিয়ার ফাইভ’ বা অগ্রগামী পাঁচ দেশের অন্তর্ভুক্ত করেছে।
আশাহত হওয়ার মতো কিছু দিকও ছিল গত বছরটিতে। ব্যাংকিং সেক্টরের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সচেতন মানুষের মাথাব্যথার বড় কারণ হয়েছে। দুর্নীতির লাগাম এখনো শক্তভাবে টেনে ধরা যায়নি। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। দেশের অর্থনীতির জন্য এটি একটি বড় ঝুঁকি হিসেবেই রয়ে গেছে। জঙ্গি কর্মকাণ্ড কিছুটা কমলেও হুমকি পুরোপুরি দূর হয়নি। যেকোনো সময় জঙ্গিরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও মানুষের দুশ্চিন্তা ছিল। গুম-খুনের ঘটনা অহরহই ঘটে চলেছে।
নতুন বছরে নতুন সরকারের হাতে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাবে, এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা। নতুন বছরের প্রথম প্রহরে আমাদের অঙ্গীকার হোক আরো সুদৃঢ়। আলোর পথে, প্রগতির পথে আমাদের এগিয়ে চলা আরো বেগবান হোক। সাফল্যের পথে ২০১৯ সাল হোক একটি মাইলফলক। আমাদের পাঠক, গ্রাহক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা।
পিবিএ/এফএস