জামায়াত আমীর ডা: শফিকুর রহমান

‘স্বৈরাচারেরা এখনো সিন্ডিকেট করে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে’

আরিফ মোল্ল্যা, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ডা.শফিকুর রহমান সরকারের বাজার সিন্ডিকেট ভেঙ্গে ফেলার আহবান জানিয়ে বলেন বিগত জালিম সরকারের সময় যারা সিন্ডিকেট গঠন করেছিল তারাই এখনো সিন্ডিকেট পরিচালনা করছে। সিন্ডিকেট ভেঙ্গে তছনছ করে দিন। জনগণকে স্বস্থি দিন। স্বস্থি দেওয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করুন। ভালো কাজে এগিয়ে যান। জনগণের কাঙ্খিত সংস্কার সাধন করুন। জনগণের ৩৭ কোটি হাত আপনাদের সাহায্য করবে।

আপনারা ভুল করলে আমরা শুধরিয়ে দেব। আপনারা একগুয়েমি করলে আমরা প্রতিবাদ করবো। আপনাদেরকে একগুয়েমি করতে দেওয়া হবে না। অতিতের জালিমরা যা করেছে আমরা কেউ যেন তা না করি। মানুষের উপর জুলুম করলে তার পরিনতি কি হয় কেবলই তা চোখের সামনে আমরা দেখে নিলাম। এখান থেকে সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে। কেউ যদি একই পথে চলে তারও একই পরিনতি হবে কোন ব্যতিক্রম হবে না।

বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহ শহরের উজির আলী স্কুল এ- কলেজ মাঠে জেলা জামায়াত আয়োজিত এক কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বিগত সরকারের অত্যাচার নির্যাতনের কথা তুলে ধরে বলেন, সকলকে দেশে ফিরিয়ে এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আগামী দিনে জামায়াত রাষ্ট্রক্ষমতায় আসলে নারীদের সবোর্চ্চ সম্মানের সাথে সমাজ উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হুসাইন ও মাওলানা আজিজুর রহমান।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, ড. মোস্তাফিজুর রহমান, মো: হারুন উর রশিদ, ড.মাওলানা মোজাম্মেল হক, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হাই, আব্দুল আলীম, মাওলানা আবু তালিব, ড.মাওলানা হাবিবুর রহমান, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী আব্দুল আওয়াল, ড.মোস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা মতিউর রহমান, মো: বাবুল হোসেন, মো: মতিয়ার রহমান, মাওলানা ওলিয়ার রহমান, মো: আজিজুর রহমান, ফারুক আহমেদ, শহীদ ইবনুল পারভেজের পিতা মাস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবিরি সভাপতি এইচএম আবু মুসা, ছাত্র শিবিরের ঝিনাইদহ শহর সভাপতি মেহেদী হাসান রাজুু, জেলা সভাপতি মনিরুল ইসলাম প্রমূখ।

প্রধান অতিথি বলেন যারা একদিন গর্ব করে বলতেন এই দেশ আমার বাপ দাদার এদেশ ছেড়ে আমরা কোথাও পালাবো না। তারা কি জাতির সাথে দেওয়া কথা রক্ষা করেছেন? তাদের কর্মীদের সাথে দেওয়া কথা রক্ষা করেছেন? তারা কারো সাথে দেওয়া কথা রক্ষা করতে পারেননি। কারণ তারা আল্লাহকে ভয় করতেন না। তারা নফসের পুজা করতেন। এইসব অপকর্মের ভয়ে এই দেশে দাড়িয়ে স্থির থাকার দু:সাহস তাদের হয় নাই। আমরা তাদের বিচার চাই। এদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে। যে যেখানেই থাকুক তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এবং ন্যায় বিচারের মাধ্যমে তাদের উপযুক্ত পাওনাটা তাদেরকে দিয়ে দিতে হবে।

প্রধান অতিথি আরও বলেন, রাসুলে করীম (সা:) মা বোনদেরকে রাষ্ট্রিয় কাজে লাগিয়েছেন, পরামর্শ করেছেন, যুদ্ধের ময়দানে সাথে নিয়ে যুদ্ধ করেছেন। শিক্ষার ক্ষেত্রে মায়েরা আলো ছড়িয়েছেন। আমাদের মায়েদের যাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও মেধা আছে তারাও সমাজে সম্মানের সাথে অবদান রাখবেন। তাদের কাউকেই আমরা গৃহবন্দি করে রাখবো না। সমাজ উন্নয়নের ইজ্জতের সাথে ইসলামের বিধান অনুযায়ি তারা ভুমিকা পালন করবেন।

দীর্ঘ দেড় যুগ ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। তাই নেতাকর্মীদের মাঝে ছিল ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা। সকাল থেকেই বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে ঝিনাইদহ শহরের ওয়াজির আলী স্কুল এ- কলেজ মাঠে জড়ো হয় নেতাকর্মীরা। পরে বিকাল ৩টার পর কর্মী সম্মেলনে যোগ দেন আমীরে জামায়াত ডা:শফিকুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত জামায়াতের এই কর্মী সমাবেশে সম্মেলন স্থল কানাই কানাই ভরে যায়। সেসময় দলের নেতা-কর্মীরা বাসা-বাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থান থেকে এই কর্মী সম্মেলনে অংশ নেন।

 

আরও পড়ুন...