পিবিএ,ঢাকা: ঢাকার কেরানীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত হাত পায়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে সায়মন হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা মো. সুমন ওরফে গ্লাস সুমনসহ ৫ জন’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত সুইচগিয়ার ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে কাওরান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা মো. সুমন ওরফে গ্লাস সুমন (২৯), মো. সোহাগ ওরফে লম্বু সোহাগ (২৮), শরীফ ওরফে গরীব (২৯),জনি ওরফে হর্স পাওয়ার জনি (৩২) ও হারুন (৩২)।
মঈন বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকায় সায়মন ওরফে নুরে আলম (২৫)কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় নিহত সায়মনের ভাই মো. আরস আলম ঢাকা কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় ৭/৮ জন অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরপর র্যাব আসামীদের গ্রেফতারে ছায়া তদন্ত শুরু করে ও জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব গতকাল রাত হতে ভোর পর্যন্ত ঢাকার কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান করে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত মূলহোতাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্টতার তথ্য প্রদান করেছে বলে জানায় মঈন।
মঈন আরও বলেন, সুমন ওরফে গ্লাস সুমন একটি মাদক সিন্ডিকেটের মূলহোতা। সে দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। কেরানীগঞ্জসহ এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় সে ১২-১৫ জনের “গ্লাস কোম্পানী” নামে একটি মাদক সিন্ডিকেট গড়ে তোলে বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে জানা যায় কিছুদিন পূর্বে নিহত সায়মন “গ্লাস কোম্পানী” মাদক সিন্ডিকেটটির কয়েকজন সদস্য সম্পর্কে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট তথ্য দেয়; যার প্রেক্ষিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ওই মাদক সিন্ডিকেটের কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত সুমন ও তার সহযোগীরা ভিকটিম সায়মনকে সন্দেহ করে। এরই প্রেক্ষিতে প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তারা হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত করে বলে জানায়।
জানা যায় ঘটনার কয়েক দিন পূর্বে ভাগনা, বালুরচর মুক্তিরবাগ বালুর মাঠে এলাকায় হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা গ্লাস সুমন ও তার অন্যান্য ৫-৬ জন সহযোগীরা হত্যাকাণ্ডের চুড়ান্ত পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৫ জানুয়ারি গ্লাস সুমন সিন্ডিকেট মুক্তিরবাগ বালুর মাঠে সায়মনকে জোরপূর্বক নিয়ে এসে হাত ও পায়ের রগ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে দেয় এবং এলোপাতারি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে স্থান ত্যাগ করে। প্রায় ৩০ মিনিট ব্যাপী তারা এই হত্যাকান্ডটি চালায়। পরবর্তীতে স্থানীয় জনগণ সায়মনকে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
পিবিএ/জেডএইচ