অতি বিপজ্জনক সামুদ্রিক ঝড় হারিকেন বেরিলের আঘাতে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দ্বীপ ‘ইউনিয়ন আইল্যান্ড’। সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডিনসের পাশে অবস্থিত এই দ্বীপটিতে এখন আর কোনো বাড়িই অক্ষত নেই।
দ্বীপটির বাসিন্দা ক্যাটরিনা কোই এক ভিডিও বার্তায় সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, “বেরিল অতিক্রম হওয়ার পর ইউনিয়ন দ্বীপ খারাপ অবস্থায় রয়েছে। কার্যত পুরো দ্বীপের সব বাসিন্দা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।”
“কোনো বাড়ি আর অক্ষত নেই। ঘরবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুতের খুঁটিগুলো মাটিতে পড়ে আছে। সবকিছু হারিয়ে গেছে। আমার এখন থাকার মতো কোনো জায়গা নেই।”
১৯৮৫ সাল থেকে এই দ্বীপটিতে বসবাস করছেন তিনি। ২০০৪ সালে হারিকেন ইভান নামের আরেকটি ভয়াবহ ঝড়ের মধ্যে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু হারিকেন বেরিলের মাত্রা আগের ঝড় থেকে অন্যরকম ছিল বলে জানিয়েছেন ঝড়ে বিধ্বস্ত এই ব্যক্তি।
তিনি বলেছেন, “এখান দিয়ে যেন একটি টর্নেডো অতিক্রম করেছে। দ্বীপের ৯০ শতাংশ অংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।”
ঝড়ের ভয়বহতা এবং এটির ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ক্যাটরিনা কোই যে এখনো হতবিহ্বল হয়ে আছেন এটি তার কথায় স্পষ্ট।
তিনি বলেছেন, “আমি আমার স্ত্রী এবং মেয়েকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম। সত্যি বলতে, আমি নিশ্চিত ছিলাম না এই রাতে বাঁচব।”
তার চাচাত বোন আলজি, যিনি পরিবারের সঙ্গে একটি হোটেল চালান। তিনি জানিয়েছেন, হারিকেনটি আঘাত হানার সময় ঘরের দরজা ও জানালাগুলোর সামনে ফার্নিচার রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। যেন তীব্র ঝড়ো বাতাসে এগুলো উড়ে না যায়।
তিনি বলেছেন, “চাপ অনেক শক্তিশালী ছিল যে এটি আমরা কানেও অনুভব করছিলাম। আমরা নিজ কানে শুনতে পারছিলাম এক বাড়ির ছাদ উড়ে এসে আরেক বাড়ির ছাদে পড়ছে, জানালা ভাঙছে, পানি ঢুকছে। কেউ বুঝতে পারেনি ঝড়টি এতটা খারাপ হবে। সবাই বেশ ভীত হয়ে পড়েছেন।”
এই নারী জানিয়েছেন, এখন দ্বীপের সব বাসিন্দাদের লক্ষ্য হলো থাকার একটা জায়গা তৈরি করা। এজন্য অনেকে ভাঙা কাঠ দিয়ে অস্থায়ী বাসস্থান তৈরি করছেন। এছাড়া খাবার ও সুপেয় পানি যোগার করাটাও তাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
হারিকেন বেরিলের আঘাতে এখন পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এটি শক্তি ধরে রেখে এখন জ্যামাইকার দিকে এগিয়েছে। সেখানে পূর্ণ শক্তি নিয়ে বেরিল আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।