পিবিএ চট্টগ্রাম: রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংগ্রহ করার ঘটনা নিয়ে এখন গোটা প্রশাসনে চলছে তোলপাড়। ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছে নির্বাচন কমিশনের তদন্ত টিম, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং আইনশৃংখলা বাহিনী। গতকালই উদ্ধার করা হয়েছে চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশনের হারিয়ে যাওয়া একটি ল্যাপটপ। আটক করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের একজন অফিস সহকারীসহ তিনজনকে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এনআইডি কার্ডের তথ্য আপলোড করার কাজে ব্যবহৃত বিশেষ একটি ল্যাপটপ চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে ২০১৫ সালে গায়েব হয়ে যায়। ভোটার তালিকা তৈরির জন্য ব্যবহৃত ওই ল্যাপটপটি দিয়েই রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড তৈরি করা হচ্ছিল বলে ধারণা করছেন দুদক কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান জানিয়েছেন, এদের বিরুদ্ধ্বে থানায় মামলা করা হচ্ছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তকারী টিম ধারণা করছেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায়ই রোহিঙ্গারা এনআইডি কার্ড পাচ্ছেন। কারণ ইসি’র নির্দিষ্ট কিছু কম্পিউটার ছাড়া এনআইডি কার্ডের জন্য তথ্য আপলোড করা যায় না।
এ বিষয়ে দুদকের তদন্তকারী দলের প্রধান শরীফ উদ্দীন জানান, চট্টগ্রাম নির্বাচন অফিসে ব্যবহৃত ল্যাপটপ (আইপি নম্বর: ৪৩৯১) ২০১৫ সালে হারিয়ে যাওয়ার পর ইসির কর্মকর্তারা একটি সাধারণ ডায়েরি করতে পারতেন কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাতে পারতেন এবং হারিয়ে যাওয়া কম্পিউটারটির লাইসেন্স ব্লক করতে পারতেন।
তিনি আরও বলেন, “দুঃখের বিষয় গেল চার বছরে ইসি কর্মকর্তারা এমন কোনো পদক্ষেপই নেননি। এজন্যই আমরা ধারণা করছি নির্বাচন কমিশন অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তারা এতে জড়িত থাকতে পারেন।“
নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার করা বা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত প্রমাণ হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সোমবার চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এদিকে, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেছেন, রোহিঙ্গারা ন্যাশনাল আইডি (এনআইডি) সংগ্রহের চেষ্টা করছে, কিন্তু সফল হবে না। আজ (সোমবার) বিকেলে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনআইডি’র ডিজি সুনির্দিষ্টভাবে বলেন, ‘কোনও রোহিঙ্গাই এনআইডি পায়নি। বাংলাদেশে আসা প্রায় ১১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গার আঙুলের ছাপ ও পরিচিতি সম্বলিত তথ্য সার্ভার কমিশনের কাছে রয়েছে। তাই তাদের কেউ চাইলেই ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না।
পিবিএ/জেডআই