পিবিএ ডেস্ক : সিডনিতে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার প্রথম একদিনের ম্যাচের বাইরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন অধুনা ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে বিতর্কিত দুই চরিত্র হার্দিক পান্ডে এবং কে এল রাহুল। সিডনিতেই তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড হয়েছেন। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে শনিবার তীব্র বাদানুবাদের সৃষ্টি হয়।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের শাসনভার এখন সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের (সিওএ) হাতে। তাদের দুই সদস্য সিওএ প্রধান বিনোদ রাই এবং ডায়ানা এডুলজির মধ্যে মতভেদ চরমে। কোনও ব্যাপারেই তারা ঐকমত্য হতে পারছেন না। হার্দিকদের ঘটনা নিয়েও দু’জনে সম্পূর্ণ দুই মেরুতে। ডায়ানা দাবি করতে থাকেন, হার্দিকদের কড়া শাস্তি তো দিতেই হবে। তাদের অবিলম্বে দেশেও ফিরিয়ে আনা উচিত। অন্যদিকে বিনোদ রাই প্রথমে হার্দিকদের শাস্তির দাবি তুললেও আইনি জটিলতা বুঝতে পেরে পরে কিছুটা নরম হন। তিনি বলেন, বিশেষ প্যানেল তৈরি করে তাদের উপরেই সমস্ত ভার ছেড়ে দেওয়া হোক।
শ্রীনিবাসন বৈঠক করেছেন বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে। সেখানে বিনোদ রাইয়ের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযাগ আনা হয়েছে। কিন্তু নিয়ম বহির্ভূতভাবে হার্দিকদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে কেন, তা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেননি। আলোচনার পুরোটাই ছিল নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্য।
ওদিকে, হার্দিকরা টিমের সঙ্গে থাকবেন কি থাকবেন না, তাদের কয় ম্যাচ বাইরে বসিয়ে রাখা হবে, তা নিয়ে সম্পূর্ণ ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে ভারতীয় দলের মধ্যে। শনিবার প্রথম ওয়ান ডে খেলতে নামার আগে পর্যন্ত ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট জানত না হার্দিকরা কি ফেরার বিমান ধরছেন? তারা কি দলের সঙ্গে মাঠে যাবেন? না কি এদিনই তাদের সিডনি থেকে পত্রপাঠ বিদায় নিয়ে দেশের বিমান ধরতে হবে? এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, টিম হোটেল থেকে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে যে ভারতীয় দল বের হল, তা ছিল এক বিতর্কবিদ্ধ এবং বিভ্রান্ত ভারতীয় দল। কেউ কেউ মনে করছেন তার প্রভাব এদিন খেলার মধ্যেও পড়েছে। তবে ভারতীয় বোর্ডের থেকে দেরিতে হলেও যোগাযোগ করা হয় টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে (সম্ভবত ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে)। কিন্ত টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনার পরেও জট খুলেছে বলে গত শনিবার রাত পর্যন্ত খবর নেই।
বেন স্টোকসের উদাহরণ তুলে এনে কেউ কেউ বলছেন, ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডারের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়েছিল। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড তাকে নির্বাসিত করলেও আদালতে মামলা চলাকালীন স্টোকসকে ভারতের বিরুদ্ধে খেলার অনুমতি দেওয়া হয়। স্টোকস শুধু খেলেনইনি। এজবাস্টনে প্রথম টেস্টে বিরাট কোহালির উইকেট নিয়েই ভারতের জয়ের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দেন। গোটা সিরিজে দু্র্দান্ত খেলে ইংল্যান্ডকে সিরিজ জিততে সাহায্য করেন। ভারত অধিনায়ক স্বয়ং হার্দিক এবং রাহুলের মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। বলেছেন, তাদের মন্তব্যের সঙ্গে দলের মনোভাবের কোনও মিল নেই। এটা একান্তই ব্যক্তিগত মন্তব্য। তবে যেভাবে দুই ক্রিকেটারকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে বা দেশে ফিরিয়ে আনার কথা উঠছে, তাতেও কি সায় দেবেন কোহালিরা? মনে হয় না। বরং যা ইঙ্গিত, ভারতীয় দলের মধ্যে ভোট নিলে হার্দিকদের দু’ম্যাচ সাসপেনশন করা নিয়ে অনেকে হয়তো সায় দেবেন। কিন্তু দেশে ফিরিয়ে আনার প্রশ্নে কারও সায় আছে বলে মনে হয় না।
পিবিএ/জিজি