হিমালয় কন্যা রূপসী পঞ্চগড় ভ্রমন

পিবিএ ডেস্ক: আসছে ভ্রমণের মৌসুম। বছরের এ সময়ে সৌন্দর্যপিপাসুরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন। দেশের অগ্রসরমান পর্যটনশিল্পকে এগিয়ে নিতে বড় ভূমিকা রাখেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা।এবার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে যেতে পারেন ঢাকা থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। হিমালয়ের পাদদেশে জেলাটির ভৌগোলিক অবস্থান হওয়ায় পঞ্চগড়কে বলা হয় হিমালয় কন্যা।

হাজার বছরের গৌরব-গাঁথা ও প্রাচীন ইতিহাস ঐতিহ্যের অগণিত স্মৃতিমণ্ডিত বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জনপদ হিমালয় কন্যাখ্যাত পঞ্চগড়। পুন্ড্র, গুপ্ত, পাল, সেন ও মুসলিম শাসনামলের হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এ জনপদ। সেইসঙ্গে রয়েছে অপরুপ ‍প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

পর্যটনের সব উপাদান বর্তমান থাকায় ও উত্তরের শীতপ্রবণ এই জেলার অপরূপ সৌন্দর্যের কারণে দিন দিন ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বাড়ছে পঞ্চগড়ের কদর।
পঞ্চগড়ের সর্ব উত্তরের উপজেলা তেতুলিয়ায় রয়েছে বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্ট।
এখানেই অবস্থিত বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটানের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের একমাত্র সম্ভাবনাময় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। নিত্যদিন দেশের জিরোপয়েন্ট দেখতে ভিড় লেগেই রয়েছে পর্যটকদের। ভিড় করছেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরাও।

এই বাংলাবান্ধা থেকে নেপালের দূরত্ব মাত্র ৬১ কিলোমিটার, এভারেস্ট শৃঙ্গ ৭৫ কিলোমিটার, ভুটান ৬৪ কিলোমিটার, চীন ২০০ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিং ৫৪ কিলোমিটার ও শিলিগুড়ি ৮ কিলোমিটার। জেলার আরেক পর্যটন স্পট কাঞ্চনজঙ্ঘা। তেতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব হাতের কাছেই। শরতের শেষের দিক হতে শীত পর্যন্ত তেতুলিয়া ডাক বাংলোতে দাঁড়িয়ে উত্তরের মেঘমুক্ত আকাশে তাকালেই চোখে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার মন হরণীয় মায়াবী দৃশ্য।‍

মনোরম আবহে প্রকৃতির এই অপরুপ সৌন্দর্য ভ্রমণ পিপাসুদের মনে অপার্থিব মায়ার ঘোর সৃষ্টি করে।অপূর্ব সুন্দরের রাজ্য পঞ্চগড়ের অনন্য আরেক দিক হলো এখানকার সবুজের নৈসর্গ চা বাগান। দেশের একমাত্র এখানেই সমতল ভূমিতে চা চাষ করা হয়। জেলার চা বাগানগুলোতে সবুজারণ্যে চা গাছ থেকে পাতা তোলার দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে আসে। পর্যটকদের কাছে পঞ্চগড়ের আকর্ষণীয় জায়গা ও স্থাপনার মধ্যে আরও রয়েছে মোঘল স্থাপত্য মির্জাপুর শাহী মসজিদ, বার আউলিয়ার মাজার, সনাতন ধর্মের বোদেশ্বরী মন্দির, ভূগর্ভস্থ পাথর তোলার দৃশ্য, ১৫০০ বছরের পুরাতন সুবিশাল মহারাজার দীঘি, দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রত্নতত্ত্ব নির্দশন ভিতরগর দূর্গনগরী।

অতিথিপরায়ণ ও সহজ-সরল হিসেবে পঞ্চগড়ের মানুষের খ্যাতি রয়েছে। পঞ্চগড়ে আসা দর্শনার্থী ও ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য থাকার নানা ব্যবস্থাও রয়েছে। থাকতে পারেন সরকারি বাংলো বা বেসরকারি বিভিন্ন হোটেলে।

রাজধানী ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ের দূরত্ব প্রায় ৫০০ কিলোমিটার। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সড়কপথেই সরাসরি আসা যায় পঞ্চগড়ে। তবে আকাশপথে আসতে হলে প্রথমে পাশের জেলা নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আসতে হবে। পরে সেখান থেকে গাড়িতে করে পঞ্চগড়।

পিবিএ/ইকে

আরও পড়ুন...