কোয়ারেন্টাইনে থেকেই চিকিৎসা নেবেন খালেদা

পিবিএ,ঢাকা: বিএনপি নেতারা একসময় দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার জোর দাবি জানালেও করোনা মহামারির বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘আপাতত’ তাকে বাসায় রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের বোন সেলিমা ইসলাম শুক্রবার (৮ মে) একটি গণমাধ্যমকে জানান, দেশের বর্তমান যে সার্বিক পরিস্থিতি, বৈশ্বিক যে অবস্থা, এখন তো সেটা (বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া) তো সম্ভব নয়। সেজন্য তাকে বাসায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। আর যারা চিকিৎসা দিচ্ছেন, সেই টিমে যারা সদস্য, তারা সকলে এক্সপার্ট ফিজিশিয়ান।

দলীয় প্রধানের চিকিৎসার ব্যাপারে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ম্যাডামের চিকিৎসা নিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা যেটা বলবেন সেটাই সঠিক।

বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার দাবি ছিল দলের পক্ষ থেকে। এখন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বাসাতেই হবে বলে তার বোন সেলিমা ইসলাম জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘সে সময় তো নরমাল সিচুয়েশন ছিল, সেটা আপনারা সবাই জানেন। এখন তো সেই সিচুয়েশন নেই। আমরা বিদেশে চিকিৎসার দাবি জানিয়েছিলাম কিন্তু সে অনুমতি দেয়া হয় নাই। এখন এই যে করোনা পরিস্থিতি তাতে ওনার বাসার থেকে বের হওয়া বিপজ্জনক। তাই হোম কোয়ারেন্টাইনে থেকেই চিকিৎসা নেবেন তিনি।’

দুর্নীতির দায়ে ২৫ মাস সাজা ভোগের পর ‘মানবিক বিবেচনায়’ সরকারের নির্বাহী আদেশে গত ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার আগে প্রায় এক বছর কারা তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

তবে তার পরিবার এবং বিএনপি নেতারা বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা করানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের চিকিৎসকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস ও চোখের সমস্যায় ভুগছেন। তবে তার মূল সমস্যা গেঁটে বাত (অস্টিও-আর্থ্রাইটিস)। হাসপাতালে তাকে বিশেষ থেরাপি দেয়ার কথা বলা হলেও তাতে তিনি সম্মতি দেননি।

তার মুক্তির সময় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে, তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না- এই শর্তে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়া হচ্ছে।

মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া তার গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা‘য় ওঠেন এবং গত প্রায় দেড় মাস সেখান থেকে আর বের হননি।

বাসায় ফেরার পর থেকে চিকিৎসকদের একটি দলের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। কয়েক সপ্তাহ পরপর তারা এসে বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে যান। সর্বশেষ গত সপ্তাহেও তারা ফিরোজায় গিয়েছিলেন।

পরিবারের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাসায় খালেদা জিয়ার সময় কাটে ইবাদত-বন্দেগিতে। মাঝে মাঝে টেলিফোনে দুই ছেলের স্ত্রী ও নাতনীদের সঙ্গে কথা বলেন।

বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানও লন্ডন থেকে চিকিৎসার খোঁজখবর নেন বলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান।

গুলশানে খালেদা জিয়ার ভাড়া বাড়ি ‘ফিরোজা’র নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, বাসায় প্রবেশাধিকার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। চিকিৎসক দলের সদস্য আর কয়েকজন নিকটাত্মীয় ছাড়া আর কারও ঢোকার অনুমতি নেই।

পিবিএ/এমআর

আরও পড়ুন...