হোলি আর্টিজান মামলার পরিকল্পনা ও অর্থ সরবরাহে যুক্ত ছিলেন মামুন

হোলি আর্টিজান মামলা
হোলি আর্টিজান মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি মামুনুর রশিদ ।

পিবিএ.ঢাকা: গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরায় জঙ্গি হামলা মামলার পলাতক আসামী মামুনুর রশিদ রিপনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গাজীপুরের বোর্ডবাজার এলাকায় একটি বাস থেকে শনিবার মধ্যরাতে এই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়। হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার জন্য ভারত থেকে তিনি অর্থ, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সংগ্রহ করেন। হোলি আর্টিজান মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি ছিলেন মামুনুর রশিদ । ২০১৮ সালের শুরুর দিকে দেশে ফিরে এসে স্তিমিত হয়ে যাওয়া জেএমবিকে ফের সংগঠিত করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।

রোববার দুপুর ১২টার দিকে কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হাজির করা হয় মামুনুর রশিদকে।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান সংবাদ সম্মেলনে জানান, গ্রেপ্তারের সময় মামুনুরের কাছ থেকে একটি ডায়েরি, চারটি খসড়া মানচিত্র এবং নগদ ১ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫৫ টাকা পাওয়া গেছে। মামুনুরের বাড়ি বগুড়ার নন্দীগ্রামের শেখের মারিয়া গ্রামে। বাংলা মাধ্যমে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর তাঁকে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়। ঢাকার মিরপুর, বগুড়ার নন্দীগ্রাম ও নওগাঁর বিভিন্ন মাদ্রাসায় তিনি পড়েছেন। সবশেষ ২০০৯ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাদ্রাসাতুল দারুল হাদিস থেকে দাওরায়ে হাদিসে পড়াশোনা শেষ করেন। পরে বগুড়ার সাইবার টেক নামে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে অফিস অ্যাপ্লিকেশন কোর্স করে ওই প্রতিষ্ঠানেই চাকরি নেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাইবার টেকে চাকরি করা অবস্থায় নজরুল নামের একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে মামুনুর রশিদ জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হন।

সারওয়ার জাহান (পরে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত) জেএমবির আমির হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন করে অর্থ সংগ্রহ ও দাওয়াতি কাজ শুরু করেন। মামুনুর বিকাশের দোকান লুটের ছয় লাখ টাকা, সিগারেট বিক্রেতার টাকা ছিনতাই করে এক লাখ টাকা, গাইবান্ধার এক ঘটনায় আরও এক লাখসহ মোট আট লাখ টাকা জোগাড় করে সারওয়ার জাহানের হাতে তুলে দেন। ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে তামিম চৌধুরী (পরে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত) ও সারওয়ার জাহানের মধ্যে গোপন বৈঠকের মাধ্যমে সমঝোতা হয়। ওই বৈঠকে মামুনুর উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে তাঁকে সুরা সদস্য মনোনীত করা হয়। সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মামুনুনের নেতৃত্বে একটি দল ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে অর্থ, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সংগ্রহের জন্য ভারতে যান। হোলি আর্টিজানে হামলার আগে মামুনুর ৩৯ লাখ টাকা জোগাড় করে সারওয়ার জাহানের হাতে তুলে দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মামুনুর হোলি আর্টিজান মামলার পরিকল্পনা ও অর্থ সরবরাহের কাজে যুক্ত ছিলেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। র‌্যাবের দাবি, উত্তরাঞ্চলে বেশ কয়েকটি জঙ্গি মামলা তাঁর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে হয়েছিল। ওই সব হামলার নেতৃত্বে ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী।

হোলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় ২১ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। তাঁদের মধ্যে ৫ জন ঘটনাস্থলে নিহত হন। পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে ৮ জন নিহত হন।

পিবিএ/জেডআই

আরও পড়ুন...