১০ ঘণ্টা পর সড়ক ছাড়লেন আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা

পুরান ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতের সামনের সড়ক থেকে সরে গেছেন শিক্ষার্থীরা।

অস্থায়ী বিশেষ আদালত সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সড়ক অবরোধ করেন আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। ১০ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান।

বিডিআর বিদ্রোহের বিচারকাজ আজ এই আদালতে চলার কথা। কিন্তু আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আদালত বসানোর প্রতিবাদ করছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। তাঁরা এই আদালত সরিয়ে নেওয়ার দাবি করছেন।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার জানান, রাত ৩টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে তাঁরা আগুন নেভাতে পারেননি।

শিক্ষার্থীরা অবরোধের কারণে আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত আদালতের সামনের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ ছিল। অবরোধের কারণে আশপাশের রাস্তায় দেখা দেয় যানজট।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা পুলিশের চকবাজার অঞ্চলের সহকারী কমিশনার মো. মাহফুজার রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অস্থায়ী বিশেষ আদালতের বিচারকের সঙ্গে দাবি-দাওয়া নিয়ে শিক্ষার্থীদের কথা বলতে দিতে হবে—এই শর্তে তাঁরা রাস্তা থেকে সরে যান। এখন পরিস্থিতি শান্ত। নিরাপত্তা নিশ্চিতে আদালত এলাকায় অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। বিচারক আদালতে এসেছেন।

এর আগে বিভিন্ন সময় আদালতের এজলাস ভাঙচুর করা হয়েছিল বলে জানায় পুলিশ। গত ৩১ ডিসেম্বের সন্ধ্যায় একদল লোক মাঠের সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে ঢুকে অস্থায়ী বিশেষ আদালতের দরজা ভেঙে ফেলেছিল। তারা ভেতরে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছিল। মাঠে থাকা একটি ফোম ও প্লাস্টিকের চেয়ারে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল।

১৫ বছর আগে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তর ঢাকার পিলখানায় বিদ্রোহ হয়। বর্তমানে এই বাহিনীর নাম বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিদ্রোহে বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে ৭৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পিলখানায় বিডিআরের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালনরত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরাও সেদিন নৃশংসতার শিকার হন।

পিলখানায় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক মামলা হয়। এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় বিচারিক আদালত ও হাইকোর্ট ইতিমধ্যে রায় দিয়েছেন। অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় বিচারিক আদালতে এখনো সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডে হওয়া মামলায় দণ্ডিত সাবেক বিডিআর সদস্যদের কারামুক্তি, মামলার পুনঃ তদন্ত, ন্যায়বিচার নিশ্চিত, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল-পুনর্বাসনের দাবিতে গতকাল বুধবার অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যসহ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য-স্বজনেরা এই কর্মসূচি পালন করেন। আজ বৃহস্পতিবার শাহবাগ ‘ব্লকেড’ করা হবে বলে জানিয়েছেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা।

আরও পড়ুন...