নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা : বহুমুখি প্রতারক সাহেদকে আজ আদালতে তুলা হবে। ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চাইবে ডিবি বলে জানা গেছে ডিবি সূত্রে।
তবে ২০১০ সালে এক চেক জালিয়াতির মামলায় তার ৬ মাসের কারাদন্ড ভোগের সাজা রয়েছে। তার মানে সে ১০ বছর যাবৎ ফেরারী আসামী।
জানা গেছে, কোভিড-১৯ পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির ঘটনায় বহুরুপী প্রতারক সাহেদ। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ডিবি কার্যলয় থেকে সাহেদকে বহনকারী গাড়ি আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে করোনার জাল পজেটিভ-নেগেটিভ মনগড়া সার্টিফিকেট প্রদানের অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া বেড়িয়ে আসছে আরো নানান অভিযোগ। যা দেখে খোদ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও বিস্মিত। এর মধ্যে চমকপ্রদ বিষয় হচ্ছে একটি চেক জালিয়াতর মামলায় সে ৬ মাস কারাদন্ডপ্রাপ্ত ফেরারী আসামি। কারাদন্ডের সাজা মাথায় নিয়েই সাহেদ ১০ বছর দাপিয়ে বেড়িয়েছে দেশের শীর্ষ দরবার পর্যন্ত।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুস সাত্তার দুলাল সূত্রে জানা গেছে, ‘চেক প্রতারণার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি সাহেদ করিম। ২০০৮ সালে চেক জালিয়াতির অভিযোগে মজিবর রহমান নামের একজন ব্যবসায়ী সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। সেই মামলায় বিচার শেষে ২০১০ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত সাহেদকে ৫৩ লাখ টাকা জরিমানা করেন। একই সঙ্গে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। আদালত থেকে সাহেদের বিরুদ্ধে তখনই সাজার পরোয়ানা জারি করা হয়। কিন্তু পুলিশ আজ পর্যন্ত সাহেদকে ধরেননি। ফলে বাদী তাঁর টাকাও পাননি। ওই মামলায় সাহেদ পলাতক ছিলেন। পলাতক থাকা অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছিল।’
আরও পড়ুন:রিজেন্টকেও হার মানাবে টঙ্গী গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের ভয়ংকর প্রতারণা
সবকিছু ছাপিয়ে সাহেদের করোনা সার্টিফিকেট জালিয়াতি দেশ-বিদেশে ব্যপক সমালোচিত ঘটনা। করোনার জাল সনদের কারনে ইতালিতে ২৪ জন বাংলাদেশী প্রবাসির দেহে করোন শনাক্ত হয়। ফলে সেদেশের সরকার বাংলাদেশী প্রবাসীদের ইতালিতে প্রবেশ আক্টোবর পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেছে। একই সূত্রধরে জাপান, কোরিয়া, আরবআমিরাতসহ অন্য কয়েকটি দেশও বাংলাদেশ থেকে বিমানের ফ্লাইট বাতিল করেছে। এতে বিশে^ বাংলাদেশের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।
গতকাল বুধবার ভোরে সাতক্ষীরা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড একশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। বোরকা গায়ে সাহেদ ছদ্মবেশ ধরে সীমান্ত পারি দেবার চেষ্টা করছিলো। র্যাব তার কাছ থেকে একটি বিদেশী পিস্তল উদ্ধার করে। পরে গতকাল দুপুরে সাহেদের গোপনা আস্তানা উত্তরার একটি ফ্লাটে অভিযান চালিয়ে প্রায় দেড় লাখ জাল টাকাও উদ্ধার করে। সে এসব জাল অর্থ দিয়ে দেনা পরিশোধ করেছে। অবস্থাদৃষ্টে একটা বিষয় সবার কাছেই স্পষ্ট সাহেদ প্রতারণার কোন কৌশলই বাদ রাখেনি।
এ ব্যপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোঃ আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন ভবিষ্যতে ছাড়া পেয়ে সাহেদ যাতে আর কোন প্রতারণা করতে না পারে তা দেখা হবে।
পিবিএ/ এমএ