লক্ষ্য মাত্র ১০৭ রান। বেঙ্গালুরু টেস্টের পঞ্চম দিন সকালে নিউজিল্যান্ডের জন্য এটাকেই যেন অনেক দূরের পথ মনে হচ্ছিল। এর কারণটা আসলে যশপ্রীত বুমরা ও মোহাম্মদ সিরাজের দুর্দান্ত বোলিং।
দুই পেসার মিলে টেস্টের শেষ দিনের সকালে যে বোলিং করেছেন, তাঁদের ডেলিভারিগুলোকে তোপ দাগা বলাই যায়! শেষ পর্যন্ত অবশ্য এই বিধ্বংসী বোলিংয়ের সঙ্গে লড়ে কিউইরা সহজ জয়ই পেয়েছে। ভারতকে হারিয়েছে ৮ উইকেটে। ভারতের মাটিতে ৩৬ বছর পর টেস্ট জিতল নিউজিল্যান্ড।
সব মিলিয়ে এটি ভারতের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের তৃতীয় টেস্ট জয়। নিউজিল্যান্ড ভারতের মাটিতে সর্বশেষ টেস্ট জিতেছে ১৯৮৮ সালে। এজাজ প্যাটেল ছাড়া তখন নিউজিল্যান্ডের এই স্কোয়াডের আর কারও জন্মই হয়নি। প্যাটেলর বয়সও তখন ছিল মাত্র এক মাস। ভারতের মাটিতে তারা প্রথম টেস্ট জিতেছিল ১৯৬৯ সালে।
১০৬ রান ডিফেন্ড করতে নেমে পেসাররা ভালো করলেও রবীন্দ্র জাদেজারা ততটা প্রভাব ফেলতে পারেননি। ভারতের স্পিনারদের বোলিং ব্যর্থতার সঙ্গে উইল ইয়াং ও রাচিন রবীন্দ্রর ব্যাটিংয়েরও প্রশংসা করতে হবে। ৩৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দুজনে গড়েছেন অবিচ্ছিন্ন ৭৫ রানের জুটি। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা রবীন্দ্র অপরাজিত ছিলেন ৩৯ রানে, উইল ইয়াং করেছেন ৪৮ রান।
ভারত মূলত দেখেছিল ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন। বেঙ্গালুরু টেস্টের দ্বিতীয় দিনে নিউজিল্যান্ডের তিন পেসারের পেস, সুইং ও বাউন্সের দুর্দান্ত প্রদর্শনীতে মাত্র ৪৬ রানেই গুটিয়ে যায় ভারত, যা টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর, ভারতের মাটিতে সর্বনিম্ন এবং এশিয়ার মাটিতেও সর্বনিম্ন স্কোর। এমন ধসের পরও দ্বিতীয় ইনিংসের লড়াইয়ে একপর্যায়ে দাপট দেখিয়েছে ভারত।
৫০ রানের নিচে অলআউট হয়েও টেস্ট জয়ের ঘটনা আছে মাত্র একটিই। ১৮৮৭ সালে সিডনিতে ৪৫ রানে অলআউট হয়েও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিতেছিল ইংল্যান্ড। টেস্ট ইতিহাসে প্রথম ইনিংসে ২৯১ রানের চেয়ে বেশি পিছিয়ে থেকে কোনো দল এর আগে টেস্ট জিততেই পারেনি। সেখানে ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে পিছিয়ে ছিল ৩৫৬ রানে।
সরফরাজ খানের সেঞ্চুরি ও পন্তের ৯৯ রানে ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে করে ৪৬২ রান। এত রান করেও আক্ষেপ থাকবে ভারতের। কারণ, একটা পর্যায়ে ভারতের রান ছিল ৩ উইকেটে ৪০৮।
কিন্তু দ্বিতীয় নতুন বল হাতে পেয়ে ও’রুর্করা জ্বলে ওঠেন। মাত্র ৫৪ রানে পড়ে ভারতের শেষ ৭ উইকেট। যে কারণে নিউজিল্যান্ডের সামনে ১০৭ রানের বেশি লক্ষ্য দিতে পারেনি তারা। সংগ্রহটা বড় হলে কী হতে পারত, সেটা পঞ্চম দিনে সকালে ভারতের বোলিং দেখলেই ধারণা পাওয়া যায়!