৫ লক্ষ সুইমিং পুল ভরানোর পানি আছে গ্রহাণুতে!

water

পিবিএ ডেস্ক : এই সৌরমণ্ডলে আমাদের ঘরের কাছেই পানি আর খনিজ পদার্থের অফুরন্ত ভাণ্ডারের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই প্রথম তারা হিসেব করে দেখেছেন, আমাদের ঘাড়ে কার্যত নিশ্বাস ফেলা গ্রহাণুদের মধ্যে যে পরিমাণে পানি রয়েছে, তা দিয়ে অলিম্পিকের প্রায় পাঁচ লক্ষ সুইমিং পুল ভরিয়ে দেওয়া যাবে।

তারা জানিয়েছেন, আমাদের আশপাশেই রয়েছে অফুরন্ত পানিতে ভরা এমন সর্বাধিক ৮০টি গ্রহাণু। চাঁদ থেকে পানি আনার চেয়ে অনেক সহজে পানি নিয়ে আসা যাবে ওই গ্রহাণুগুলো থেকে। গবেষণাপত্রটি বেরিয়েছে আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়নের আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘জার্নাল অফ জিওফিজিক্যাল রিসার্চ’-এর ৬ ডিসেম্বর সংখ্যায়। গবেষণা এও জানিয়েছে, চাঁদের থেকেও সহজে পৌঁছে যাওয়া যায়, পানিতে ভরা এমন ৩৫০টি থেকে ১ হাজার ৫০টি গ্রহাণু রয়েছে আমাদের আশপাশেই। যাদের বলা হয় ‘নিয়ার-আর্থ অবজেক্ট’ বা ‘এনইও’।

মূল গবেষক জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্স রিসার্চ ল্যাবরেটরির অধ্যাপক অ্যান্ড্রু রিভকিন গবেষণাপত্রে লিখেছেন, ওই গ্রহাণুগুলোতে যে পরিমাণে খনিজ পদার্থ রয়েছে তা থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের করে আনা (নিষ্কাশন) সম্ভব। সেই খনিজ পদার্থ থেকে বের করে আনা যেতে পারে ৪০ হাজার কোটি থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি লিটার পানি।

এই ব্রহ্মাণ্ডে গ্রহাণুদের আদত ঠিকানা মঙ্গল আর বৃহস্পতির মধ্যে থাকা গ্রহাণুমণ্ডল বা অ্যাস্টারয়েড বেল্টে। ৫০০ কোটি বছরেরও আগে, সৌরমণ্ডলের জন্মের পর এই অঞ্চলেই সৃষ্টি হয় গ্রহাণুদের। সূর্যকে প্রদক্ষিণের সময় সৌরমণ্ডলের বাইরের প্রান্ত থেকে ভিতরে ঢোকার পর এই অঞ্চলেই অনেক ধূমকেতুর মাথা আর বরফের লেজ তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞানীদের বড় একটি অংশের বিশ্বাস, পৃথিবীতে পানিও এনেছিল এই গ্রহাণুই। আদিকালে পৃথিবীর সঙ্গে গ্রহাণুদের একের পর এক সংঘর্ষে পানিতে ভরে গিয়েছিল পৃথিবী।

পরে এটাও জানা গিয়েছে, শুধু গ্রহাণুমণ্ডলেই নয়, আমাদের পৃথিবীর আশপাশেও রয়েছে এমন প্রচুর গ্রহাণু বা নিয়ার-আর্থ অবজেক্ট। ১৯ হাজারেরও বেশি এমন গ্রহাণু এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়েছে। কতটা পানি রয়েছে আমাদের কাছে থাকা গ্রহাণুতে। তা আঁচ করতে ‘বেন্নু’ গ্রহাণুতে ইতিমধ্যেই মহাকাশযান ‘ওসিরিস-রেক্স’ পাঠিয়েছে নাসা। সেখান থেকে খনিজ পদার্থ তুলে নিয়ে আসার কথা নাসার মহাকাশযানের। তার আগেই কাছে থাকা গ্রহাণুগুলোতে কতটা পানি ও খনিজ পদার্থ থাকতে পারে তার হিসেব করে ফেলেছেন বিজ্ঞানীরা।

রিভকিন গবেষণাপত্রে এও লিখেছেন, ওই গ্রহাণুগুলোতে রয়েছে লোহাসহ প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ। আর সেগুলি রয়েছে লোহা ও অন্যান্য খনিজ পদার্থের অক্সাইড যৌগ হিসেবে।

পিবিএ/এসআরএস/জিজি

আরও পড়ুন...