পিবিএ ডেস্ক: পোল্যান্ডের ছোট্ট একটি গ্রাম মিয়েজস্কে ওদ্রজান্সকিয়ে। ১৯৪৫ সালের আগে এই গ্রামটি ছিল জার্মানির অংশ। তখন এর নাম ছিল ‘মিসটিটজ’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে গ্রামটি পোল্যান্ডের অন্তর্ভুক্ত হয়। বিস্ময়জনক ঘটনা হচ্ছে গত এক দশকে এই গ্রামটিতে জন্ম নেয়নি কোন পুত্রসন্তান।গত ৯ বছর ধরে কেবল কন্যাসন্তানই জন্ম হয়েছে সেখানে।
২০১০ সালের পর কোনো সদ্যোজাত শিশুপুত্রের কান্না শোনেননি গ্রামের অধিবাসীরা।একটি পুত্রসন্তানের আশায় গ্রামের অনেক গর্ভবতী কুসংস্কারেও বিশ্বাস করেছেন। তারা তান্ত্রিকের দেয়া নানা গাছ-গাছালির তাবিজ, কুড়ুলও রেখেছেন বালিশের নিচে। টোটকা থেকে শুরু করে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেয়েছেন হবু মায়েরা। তবে সব প্রচেষ্টাই বিফলে গেছে।
গত এক দশকে পুত্রসন্তান জন্ম না নেয়া এ গ্রামটির নাম মিয়েজস্কে ওদ্রজান্সকি। এটি পোল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তবর্তী ছোট্ট একটি গ্রাম।
নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ গ্রামে ৯২টি বাড়ি রয়েছে। ৩০০ মানুষের বসবাস এখানে, যার মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি। পুরুষের সংখ্যা কম থাকায় গাড়ি চালানো, ক্ষেত-খামারে চাষাবাদ থেকে শুরু করে অন্যান্য ভারী কাজও নারীদের করতে হয়।
গ্রামবাসীর মতে, এখানে সব কাজেই নারীদের নেতৃত্ব চলছে, যা গ্রামের নারীরাও চাচ্ছেন না। তাদের অনেকে চাপ সামলে নিতে পারছেন না। ‘পুরুষালি’ কাজে নারীদের অংশগ্রহণে মাঝেমধ্যেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। কাজের গুণগত মানও বিঘ্নিত হচ্ছে।
এ কারণে সদ্যোজাত পুত্রসন্তানের মুখ দেখার জন্য সাগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছেন মিয়েজস্কে ওদ্রজান্সকি গ্রামের বাসিন্দারা।
গ্রামের মেয়র ঘোষণা করেছেন, গ্রামকে যে দম্পতি পুত্রসন্তান উপহার দেবেন, তাদের বিশেষ সম্মানে ভূষিত করা হবে। সঙ্গে থাকবে উপহারও।
তিনি জানান, সেই নবজাতকের নামে গ্রামের একটি রাস্তার নামকরণ করা হবে। তার জন্ম উপলক্ষে বপন করা হবে ওক গাছ।
এছাড়া বর্ণিল আয়োজনে সেই পুত্রসন্তানকে গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ইউরোপের দেশ পোল্যান্ডে সার্বিকভাবে পুত্রসন্তানের জন্মহার বেশি। দেশটির জনসংখ্যা জরিপ জানায়, ২০১৭ সালে পোল্যান্ডে ২ লাখ ৭ হাজার পুত্রসন্তানের জন্ম হয়েছে। আর কন্যাসন্তানের জন্ম হয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার। কিন্তু মিয়েজস্কে ওদ্রজান্সকি গ্রামের বেলায় পুরো চিত্রটি কেবল ভিন্নই নয়, কোনো পুত্রসন্তানেরই জন্ম হচ্ছে না সেখানে।
এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা জানা নেই দেশটির বিজ্ঞানীদের। প্রকৃতির এই রহস্য ভেদ করা যায়নি এখনও।
১৯৪৫ সালের আগে জার্মানির অধীনে ছিল গ্রামটি। এর নাম ছিল- ‘মিসটিটজ’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গ্রামটি পোল্যান্ডের অন্তর্ভুক্ত হয়।
পিবিএ/ইকে