বাবরি মসজিদ মামলার বৃত্তান্ত (১৫২৮-২০১৯)

পিবিএ ডেস্ক: মুসলমানদের জন্য নতুন একটি মসজিদ নির্মাণে আলাদা জমি বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। দেশটির প্রধান বিচারক রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতির ভিত্তিতে শনিবার এই রায় দিয়েছেন।

রায়ে বলা হয়, রাম মন্দির ভেঙ্গে বাবরী মসজিদ নির্মিত হয়নি। ১৯৯২ সালে এই মসজিদ ভাঙ্গা বেআইনী ছিলো।

ভারতের অযোধ্যা মামলার রায়ে দেশটির শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন সাংবিধানিক বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন, এসএ বোবদে, ডিওআই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষন ও এস আবদুল নাজির।

রায়ে বলা হয় মসজিদের জমির ২.৭৭ একর মন্দির ট্রাষ্টের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে এর আগেই অযোধ্যার প্রমিন্যান্ট স্থানে মসজিদ নির্মাণের জন্য ৫একর জমি বরাদ্দ দিতে হবে।

মামলার বিস্তারিত ইতিহাস:

১৫২৮: মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপ্রধান মীর বাকী বাবরি মসজিদ নির্মাণ করেন।
১৮৮৫ : মহন্ত রঘুবীর দাসবাবরি মসজিদেও বাইরে একটি অস্থায়ী মন্দির তৈরির দাবি জানান। ফৈজাবাদ কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।
১৯৪৯: বিতর্কিত কাঠামোর বাইওে কেন্দ্রীয ডোমের নীচে রামলালার মূর্তি স্থাপন করা হয়।
১৯৫০: জনৈক গোপাল সিমলা বিশারদ রাম লালার মূর্তি পূজার জন্য জানিয়ে ফৈজাবাদ জেলা কোর্টে আবেদন জানান।
১৯৫৯: এলাকার অধিকার দাবি করে নির্মোহী আখড়া মামলা করে।
১৯৬১: উত্তরপ্রদেশের সুন্নী ওয়াকফ বোর্ডও এলাকার অধিকার জানিয়ে পাল্টা আবেদন করে।
১৯৮৬ (১ অক্টোবর): স্থানীয় আদালত সরকারকে এক নির্দেশে হিন্দুদের পূজা করার অনুমতি দিয়ে রামলালা যেখানে রয়েছে তার গেট খুলে দিতে বলে।
১৯৮৯: ভগবান শ্রী রামলীলা বিরাজমানের পক্ষে তার সখা এলাহাবাদ হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি দেওকী নন্দন আগরওয়াল আদালতে মামলা করেন।
১৯৯০(২৫ সেপ্টেম্বর): অযোধ্যায় রামমন্দিও নির্মানের লক্ষ্যে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানী গুজরাটের সোমনাথ থেকে দেশব্যাপী রথযাত্রা শুরু করেন।
১৯৯২ (৬ ডিসেম্বর): বিজেপি নেতাদের নেতৃত্বে করসেবকদের একটি দল উন্মত্ততার সঙ্গে বাবরি মসজিদকে ধুলিসাৎ করে দেয়।

১৯৯৪ (২৪ অক্টোবর): সুপ্রিম কোর্ট ইসলাম ফারুকির মামলায় এক ঐতিহাসিক রায়ে প্রথম জানায় যে, মসজিদ ইসলাম ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অংশ নয়।
২০০২(এপ্রিল): এলাহাবাদ হাইকোর্টে বিতর্কিত স্থানের মালিকানা সংক্রান্ত মামলার শুনানী শুরু করে।
২০১০ (৩০ সেপ্টেম্ব): এলাহাবাদ হাইকোর্ট ২:১ সংখ্যাধিক্যের রায়ে বিতর্কিত জমিকে সুন্নী ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রামলালার মধ্যে তিনভাবে ভাগ করার নির্দেশ দেয়।
২০১১ (৯ মে): সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যার ভ’মি বিবাদ নিয়ে এলাহাবাদ হাইকের্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়।
২০১৭ (২১ মার্চ): সুপ্রিম কোর্টেও তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে কোর্টের বাইরে সমাধান খোঁজার কথা বলেন।
২০১৭ (১ ডিসেম্বর: ২০১০ সালের এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ কওে ৩২ জন সিভিল রাইটস অ্যক্টিভিস্ট মামলা করে।
২০১৯ (৮ জানুয়ারি): সুপ্রিম কোট অযোধ্যার বিতর্কিত ভূমি বিবাদ মামলার শুনানীর জন্য প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, শরদ অরবিন্দ বোরদে, এন ভি রমন, ইউ ইউ ললিত ও ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড়কে নিয়ে ৫ সদস্যের সংবিধান বেঞ্চ গঠন করে।
২০১৯ (২৫ জানৃুয়ারি): বিচারপতি ইউ ইউ ললিত এই মামলা থেকে সওে দাঁড়ানোয় সুপ্রিম কোর্ট সংবিধান বেঞ্জ প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, শরদ অরবিন্দ বোরদে, এস আব্দুল নাজির, অশোক ভ’ষন ও ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড়কে নিয়ে পুনর্গঠন করে।
২০১৯ (২৬ ফেব্রুয়ারি): সুপ্রিম কোর্ট মধ্যস্থতার কথা জানায়। তিন সদস্যের মথ্যস্থতাকারী কমিটি তৈরি কওে দেয়।
২০১৯ (৯ মে): মধ্যস্থতাকারী কমিটি সুপ্রিম কোর্ঠে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করে।
২০১৯ (১ আগষ্ট): মধ্যস্থতাকারী কমিটি সিলকরা ঘামে আদালতে তাদেও রিপোর্ট জমা দেয়।
২০১৯ (৬ আগষ্ট): সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা ভূমি বিবাদ মামলার প্রতিদিন শুনানীর কথা ঘোষনা করে।
২০১৯ (১৬ অক্টোবর): শুনানী শেষ ঘেঅষনা কওে আদালত রায় সংরক্ষিত রাখে।
২০১৯ (৯ নভেম্বর): চূড়ান্ত রায় ঘোষণা।

 

পিবিএ/জেডআই

আরও পড়ুন...