পিবিএ ডেস্ক: মদ্যপ ছেলে তার স্ত্রীকে গুলি করতে উদ্যত হলে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন গর্ভধারিনী মা। এতে ধ্বস্তাধস্তির এক পর্যায়ে নিজের পিস্তলের গুলিতেই গুরুতর আহত হয় ছেলে। মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছেলে হাসপাতালে, মা কারাগারে।
মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার সালকিয়া এলাকায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়, প্রতিদিন মদ খেয়ে বাড়ি ফিরত ছেলে। তারপর শুরু হত স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর। দিনের পর দিন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখে আর সহ্য করতে পারেননি মা। বৌমাকে বাঁচাতে ছেলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি। আর তখনই ছেলের হাতে ধরা বন্দুক থেকে গুলি ছিটকে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় ছেলে মনোজ শর্মা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। মা রেনু শর্মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ৩১ বছরের মনোজের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পাকস্থলীতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনি এস এস কে এম হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এখনও কথা বলার অবস্থায় নেই। বছর ষাটেকের রেনুকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, একটি ট্যাক্সি এবং একটি ট্রাকের মালিক মনোজ অত্যন্ত রগচটা স্বভাবের বলে এলাকায় পরিচিত। অভিযোগ, প্রায় প্রতিদিনই বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে মারধর করতেন তিনি। সোমবার গভীর রাতে তিনি মত্ত অবস্থায় বাড়ি ফেরেন। পরদিন সকালে তাঁর স্ত্রী দেরি করার কারণ জানতে চান এবং মদ খেতে নিষেধ করেন। এতেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন ওই ব্যক্তি। বন্দুক বের করে স্ত্রীর মাথায় ঠেকিয়ে খুনের হুমকি দিতে থাকেন তিনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, রেনু তদন্তকারী অফিসারদের জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে বৌমার মাথায় বন্দুক ধরায় তিনি স্থির থাকতে পারেননি। চেষ্টা করেছিলেন ঝাঁপিয়ে বন্দুক কেড়ে নিতে। সেই সময় ধস্তাধস্তিতে গুলি ছুটে যায়! ঘটনার পরেই এলাকা থেকে চলে যান রেনু। পরে তিনি নিজেই গোলাবাড়ি থানায় আত্মসমর্পন করেন।
এক পুলিশ কর্মকর্তার কথায়, মনোজের মা জানিয়েছেন, ছেলের আচরণে তিনি ক্লান্ত। তাঁর বৌমা সংসারের সমস্ত কাজ করেন, তা সত্ত্বেও ছেলে প্রতিদিন তাঁকে মারধর করতেন। এমনকি, পিস্তলের বাঁট দিয়েও মারতেন মনোজ। মঙ্গলবার ছেলেকে বন্দুক হাতে খুনের হুমকি দিতে দেখে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।
পুলিশ মনোজের স্ত্রীয়ের জবানবন্দীও নিয়েছে। তিনিও রেনুর কথাই সমর্থন করেছেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, স্ত্রীকে মারধর করায় এর আগে একাধিকবার মনোজকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন রেনু। কিন্তু ফিরে এসে ফের একই কাজ করতেন ওই ব্যক্তি।
পিবিএ/এএইচ