শিশু ধর্ষনের মামলা করায় চাকুরি হারালেন মা

পিবিএ,খুলনা: খুলনায় শিশু ধর্ষনের অভিযোগে মামলা করায় কলেজের অফিস সহায়ক পদে অস্থায়ীী চাকুরিটি হারিয়েছেন এক মা। মামলা করার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে মৌখিকভাবে আসতে নিষেধ করে দিয়েছেন।


গত ১৮ জুন খুলনা মহানগরীর বয়রা এলাকার ইসলামিয়া কলেজের নৈশ প্রহরী ৭ বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনার কয়েকদিন পর শিশুটির মা নৈশ প্রহরী মহিবুল্যার (৫০) বিরুদ্ধে নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা করেন। পুলিশ মহিবুল্যাকে আটক করে আদালতে পাঠায়। তিনি জেলে রয়েছেন।
এদিকে নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে মামলা করায় কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আওছাফুর রহমান কলেজের অফিস সহায়ককে (ধর্ষিত শিশুর মা) অফিসে আসতে নিষেধ করে দেন।
ধর্ষিত শিশুটির জানান, কোন কারণ ছাড়াই তাকে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তিনি কলেজ থেকে নিয়মিত বেতন না পেলেও যা পেতেন তাতে তার সংসার চালাতে সুবিধা হতো। কিন্তু এ মুহুর্তে কলেজ থেকে চাকুরি চলে যাওয়ায় তিনি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘শিশু কন্যা ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে কাজ হারিয়েছি। এখন বুঝতেছি গরীবের বিচার চাইতে নেই।’ এ ঘটনার বিষয়ে খুলনা ইসলামী কলেজের সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা মুখ খোলেননি।
এ বিষয়ে খুলনা ইসলামীয়া কলেজের উপাধ্যক্ষ আওছাফুর রহমান বলেন, কলেজের অফিস সহায়ক মুক্তার পরিবর্তে ডিউটি করতো ওই ধর্ষিতা শিশুর মা। আমি মুক্তাকে বলেছি ওই শিশুর মা যাতে আর কলেজে না আসে। তবে শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়া ক্ষতিগ্রস্ত এ পরিবারের সামান্য রোজগারের পথ বন্ধ করে দেয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে ওই কলেজের অফিস সহায়কের কাজে নিয়োজিত থাকা শিশুটির মা কোন নির্ধারিত বেতন পেতেন না। কলেজের বিভিন্ন খাত থেকে মাসিক একটা সম্মানীর ব্যবস্থা করা হতো তাকে। এছাড়া বছরের দু’টি ঈদে শিক্ষকরা মিলে তাকে বকশিস দিতো। এভাবেই সে গত সাড়ে তিন বছর ধরে কলেজটিতে কাজ করে যা পেতো তা দিয়েই সংসার চালাতে তার কিছুটা হলেও স্বাচ্ছন্দ্য পেতেন। কিন্তু শিশু কন্যার ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে সেই পথটিও বন্ধ হয়ে গেছে তার।
এ বিষয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মমতাজুল হক পিবিএকে জানান, মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মোঃ মহিবুল্লাহকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বর্তমানে সে খুলনা জেলা কারাগারে রয়েছেন।

পিবিএ/ এইচআর/হক

আরও পড়ুন...