তীব্র গ্যাস সংকটে রাজধানীবাসী

পিবিএ,ঢাকা: দীর্ঘদিনের ধারাবাহিকতায় গ্যাস সংকটে তীব্র আকার ধারণ করেছে শীতের শুরু থেকেই । সীমাহীন জ্বালানি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রাজধানীর গৃহিনীরা। শীত আসার সাথে সাথেই রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় দেখা দিয়েছে তীব্র গ্যাস সংকট। গ্যাস না পেয়ে বিপাকে রাজধানী ঢাকার বাসিন্দারা। সারা বছর গ্যাসের সংকট থাকলেও বছরের শীতের সময়টাতে তীব্র সংকটের মুখোমুখি রাজধানীর বাসিরা।

বিকল্প জ্বালানীর সুযোগ থাকায় সম্পদশালী গ্রাহকরা বেশি টাকা খরচ করে এলপিজি ও ইলেকট্রিক চুলা ব্যাবহার করলেও চরম দুর্ভো পোহাতে হয় গস্বল্প ও নিন্ম আয়ের মানুষদের কে । ফলে রান্নার ঝামেলা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। শুধু তাই নয়, বিপাকে পড়েছে গ্যাস নির্ভর বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস, ক্ষুদ্র ও মাঝারি কলকারখানা।

বুধবার (২ জানুয়ারি) ঢাকার উত্তরা ,আহলিয়া,বাউনিয়া,দক্ষিন খান, রানাভোলা,খিলক্ষেত, মোহাম্মদপুর, বসিলা, কাটাশুর, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর, সোয়ারিঘাট, মিরপুর, গেন্ডারিয়া, মাদারটেকসহ আরও কয়েকটি জায়গা ঘুরে দেখা গেছে জ্বালানী দুর্ভোগের চিত্র। দিনে তো দূরের কথা , রাতেও গ্যাসের দেখা মেলে এ সব এলাকায়।

পুরান ঢাকার সোয়ারিঘাট এলাকায় গত সপ্তাহ থকেই গ্যাসের সংকট দেখা গেছে। আজ (২ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গ্যাস ছিল না। আর যখন গ্যাস এসেছে তখন চুলা জ্বলছিল নিবু নিবু করে।

এলাকার বাসিন্দা গনেশ বাবু বলেন, ‘গ্যাসের অভাবে আমাদের কেরোসিনের চুলায় রান্না করতে হয়। একদিকে গ্যাসের বিল আর আরেক দিকে চুলার খরচ। এই খরচ মেটাতে অনেক প্রেশারে পড়তে হয় আমাদের।’

একই চিত্র দেখা যায় রাজধানীর বসিলাতেও। বসিলা এলাকার গৃহিণী হালিমা বেগম বলেন, ‘শীত এলেই গ্যাসের ঝামেলা বেড়ে যায়, ভাত হতেই লাগে তিন ঘণ্টা, অন্য সব কিছুর কথা তো বাদই, এ অবস্থার সমাধান হবে কবে?’

মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, ‘গত ১৩ বছর ধরে গ্যাসের ঝামেলা পোহাচ্ছি, এই সময় এলেই চুলায় আগুন জলে না, তাই একটু বেশি খরচ পড়লেও এলপিজি গ্যাস কিনে নিছি।

কিন্তু গ্যাস সংকটে সবচেয়ে বেশি সমস্যার মধ্যে আছেন মোহাম্মদপুর এলাকার বস্তিবাসী, গ্যাসের অভাবে রাস্তার পাশে মাটির চুলায় রান্না করে খাচ্ছেন তারা। একই রকম চিত্র দেখা যায় রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায়।

বছরের মাঝামাঝি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলে সংকট কমার যে আশা করা হয়েছিল তা অনেকটা ফিকে এখন। জাতীয় গ্রিডে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যোগ হলেও তা প্রভাব ফেলতে পারেনি ঢাকার গ্যাস সংকটে।

পেট্রোবাংলার একটি সূত্র থেকে জানা যায়, এখন দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ৩৭০ কোটি ঘনফুট। কিন্তু পেট্রোবাংলা সরবরাহ করছে ২৬৯ কোটি ঘনফুট। ফলে দেশে এখন দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে।

পিবিএ/ইএইচকে

আরও পড়ুন...