পিবিএ ডেস্কঃ শুনতে যতই আজব লাগুক না কেন, একথা ঠিক যে স্মোকিং এবং ড্রিঙ্কিং-এর মতো পেনকিলার ওষুধের প্রতিও কারও কারও আসক্তি জন্মে যায়। তবে এই ধরনের নেশা বাকিগুলির থেকে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। কেন? একথা নিশ্চয় আলাদা করে বলে দিতে হবে না যে পেনকিলার খেলে তার কুপ্রভাব পড়ে শরীরের উপর। আর এর পরিমাণ যদি মাত্রাতিরিক্ত হয়, তাহলে তো ক্ষতির কোনও হিসাবই থাকে না। সবাই যে ইচ্ছা করে এই ধরনের নেশার শিকার হয়ে যান, এমন নয় যদিও! তবে কেনও এক অজানা কারণে এই ধরনের নেশায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্য়া বাড়ছে। তাই এখন থেকেই যদি আমরা সাবধনা না হই, তাহলে কিন্তু বিপদ! শরীরে কোথাও কোনও যন্ত্রণা হলেই প্রথম যে ওষুধটির কথা আমাদের মনে পড়ে, তা হল পেনকিলার। এই ধরনের অভ্য়াস শরীরের পক্ষে একেবারেই ভালো নয়। কীভাবে পেনকিলার ধীরে ধীরে শরীরের ক্ষতি করে সে বিষয়ে জানাতেই এই প্রবন্ধটি লেখা। আক একবার এই লেখাটি পড়ে ফললে জীবনে আর কোনও দিন এই ওষুধটির দিকে যে আপনি ফিরেও তাকাবেন না, সে কথা হলফ করে বলতে পারি।
তথ্য ১ঃ ড্রাগের মতোই পেনকিলার মস্তিষ্কের কেমিস্ট্রির পরিবর্তন করে এক ধরনের আরাম দায়ক অনুভূতি প্রদান করে। কিছু কিছু পেনকিলার তো ডোপামাইন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে যন্ত্রণা কমে যাওয়া এবং মন ভাল হয়ে যাওয়ার মতো অনুভূতিগুলির প্রকাশ ঘটতে শুরু করে। তাই তো যন্ত্রণা হলেই এই ধরনের ওষুধ খাওয়ার ইচ্ছা তৈরি হয়। আর কেউ যদি এই ইচ্ছাকে বারে বারে প্রশ্রয় দিতে শুরু করে। তাহলে পেনকিলার ওষুধের প্রতি তার আসক্তি তৈরি হতে যতসামান্য সময়টুকুও লাগে না। তাই এবার থেকে এমন ওষুধ খাওয়ার আগে একবার অন্তত ভাববেন!
তথ্য ২ঃ কিছু কিছু পেনকিলার খেলে হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় এবং সেই থেকে রোগীর মৃত্য়ু পর্যন্তও হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া পেনকিলার খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। ভুল ওষুধ নির্বাচন হয়ে গেলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। তাই সাবধান!
তথ্য ৩ঃ একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে যারা অ্যাংজাইটির শিকার, তাদের এই ধরনের ওষুধের প্রতি আসক্তি তৈরি হয় বেশি। এছাড়াও যারা অবসাদগ্রস্থ অথবা মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন করেন বা বাইপোলার ডিজঅর্ডারের শিকার, তাদের মধ্য়েও এমন ধরনের নেশায় জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা দেখা যায়।
তথ্য ৪ঃ এক্ষেত্রে জিনগত কারণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পরিবারে যদি কারও এমন ধরনের নেশার প্রতি আসক্তি থেকে থাকে, তাহলে পরবর্তি প্রজন্মেরও মধ্য়েও সেই বিষ ছড়িয়ে যায়।
তথ্য ৫ঃ কিছু কিছু মানুষের জন্ম থেকেই শরীরে ডোপামাইনের ঘাটতি থাকে। তারা এই হরমোনের মাত্রাকে স্বাভাবিক করতে পেনকিলার খাওযা শুরু করেন। এতে যতটা না শরীরের ভালো হয়, তার থেকে ক্ষতি হয় বেশি।
তথ্য ৬ঃ মাত্রাতিরিক্ত পেনকিলার ওষুধ খেলে মাথা ঘোরা, খিটখিটে হয়ে যাওয়া, কনস্টিপেশন, শ্বাস কষ্ট, হার্টের রোগ, অবসাদ, অ্যাংজাইটি প্রভৃতি অসুবিধা হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। প্রসঙ্গত, পেনকিলার ওভার ডোজের কারণে মৃত্য়ুও হতে পারে। তাই এই ওষুধটি কখনই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাবেন না।
তথ্য ৭ঃ পেনকিলার খেতে খেতে হঠাৎ করেই কেউ যদি এই ওষুধটি খাওয়া ছেড়ে দেয়, তাহলে শারীরিক অস্বস্তি, খিদে কমে যাওয়া, ইনসোমিনিয়া, পেশিতে যন্ত্রণা, মাথা ঘোরা, ডায়ারিয়া এবং শ্বাস কষ্ট হওয়ার মতো লক্ষণগুলি দেখা যেতে পারে। তাই তো খুব প্রয়োজন ছাড়া পেনকিলার জাতীয় ওষুধ খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।
পিবিএ/এমআর