‘এক দশকে ৬০ হাজার নারীকে ধর্ষণ করেছে জাতিসংঘ কর্মীরা’

পিবিএ ডেস্ক: জাতিসংঘের কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু ম্যাসেলিওড এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, গত এক দশকে জাতিসংঘ কর্মীদের দ্বারা ৬০ হাজারেরও বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। প্রায় ২০ বছর ধরে এমন তথ্য গোপন রাখার পর গেল বছর ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী প্রীতি পাটেলের হাতে এ বিষয়ক একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন ম্যাসেলিওড।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রায় ৩ হাজার ৩০০ শিশু নিপীড়ক জাতিসংঘে কর্মরত আছেন। বিশ্বজুড়ে ঝুঁকিতে থাকা নারী-শিশুদের ধর্ষণ করতেই তারা দাতা সংস্থাগুলোতে চাকরি নেয়ার চেষ্টা করেন বলেও ম্যাসেলিওডের প্রতিবেদনে উঠে আসে। এর আগে জাতিসংঘের ত্রাণকর্মীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয়েছিল।

ম্যাসেলিওড গেল বছর জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেসের নিয়োগ দেয়াদের মধ্যে থেকে ৬০ হাজার শান্তিকর্মীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছিলেন। আর বেসামরিক কর্মীরা ২০১৬ সালে ৩১১ জনকে যৌন নিপীড়ন করছেন।

এদিকে ম্যাসেলিওডের প্রতিবেদন জাতিসংঘও স্বীকার করেছে। জানিয়েছে, তাদের প্রকাশিত তালিকার তুলনায় প্রকৃত সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। জাতিসংঘ কর্মীদের দ্বারা ধর্ষণের প্রতি ১০টি ঘটনার মাত্র একটি রেকর্ড করা হয় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন তিনি।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাসেলিওড জানান, বিশ্বের হাজারও ত্রাণকর্মী ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত। কেউ যখন ইউনিসেফের টি-শার্ট পরেন তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় না তার উদ্দেশ্য কি? সেই সুযোগে তখন যা খুশি করা যায়। বর্তমানে বিশ্বজুড়েই এমনটি ঘটে চলেছে। এসব নারী নিপীড়নকে ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা বলেও উল্লেখ করেন এই শিক্ষাবিদ।

ম্যাসেলিওড দীর্ঘদিন জাতিসংঘের ত্রাণ বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে বলকান দেশগুলা, রুয়ান্ডা এবং পাকিস্তানে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে ত্রাণকর্মীদের ওপর কড়াকড়ি আরোপের জন্য প্রচারণা চালানো ম্যাসেলিওড একসময় জাতিসংঘের জরুরি সমন্বয় কেন্দ্রের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। নারী নিপীড়কদের বিচারের আওতায় আনতে যুক্তরাজ্যের নেতৃত্ব চেয়েছেন তিনি।

ম্যাসেলিওড বলেন ‘অপ্রিয় হলেও সত্য যে, যুক্তরাজ্যের জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে এই শিশু ধর্ষণের মতো অপরাধে অর্থায়ন করা হচ্ছে। জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ে এটা নিয়ে অনেক আলোচনা চলেছে। এখন সময় এসেছে এটা নিয়ে সমাধানের পথ খুঁজে বের করার। এ সমস্যা ক্যাথলিক গির্জার বিশালত্বের মতোই।

এ বিষয়ে গেল বছরের সেপ্টেম্বরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে এক ভাষণে বলেছিলেন, ‘ধর্ষণকে কেউ সমর্থন করে না। আর সেটি যদি করে থাকে জাতিসংঘে কর্মরতরা তবে তা খুবই দুঃখজনক। তারা সেই বিশ্বাস অর্জন করতে না পারলে আমরা জাতিসংঘে অর্থায়ন বন্ধ করে দেবো।

পিবিএ /ইকে

আরও পড়ুন...