পিবিএ স্পোর্টস ডেস্ক: বিশ্বকাপে আর কোনো আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের হয়ে ব্যাট হাতে দেখা যাবে না ক্রিস গেইলকে। বিশ্ব মঞ্চের বিদায়ী ম্যাচটাও রাঙালেন জয় দিয়ে। বিশ্বকাপের ৪২তম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ২৩ রানে হারায় তার দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথমে ব্যাট করে ক্যারিবীয়দের দেয়া ৩১২ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৮৮ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় আফগানরা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ (৮৬) রান করেন ইকরাম আলি খিল। রহমত শাহের ব্যাট থেকে আসে (৬২) রান।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১১ রান সংগ্রহ করে ক্যারিবিয়ানরা। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ (৭৭) রানের ইনিংস খেলেন শাই হোপ। এভিন লুইজ ও নিকোলাস পুরান দুজনের ব্যাট থেকে আসে (৫৮) রান করে।
২০১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট আসরে নিজেদের শেষ ম্যাচে লিডসের হেডিংলিতে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় মুখোমুখি হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তান। পয়েন্ট টেবিলের ৯ম স্থানে থাকা ক্যারিবীয়দের একটি জয় থাকলেও এখনো শূন্য আফগানদের খাতা। তবে নিজেদের শেষ ম্যাচটি জয় দিয়েই শেষ করতে চায় উভয় দল। টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন উইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার।
ব্যাটিংয়ের নেমে শুরুটা হোঁচট খেয়ে শুরু ক্যারিবীয়দের। বিশ্বকাপের পর অবসরের ঘোষণা দেওয়া আছে ক্রিস গেইলের। অথচ ইউনিভার্স বস থাকলেন বাক্সবন্দী হয়েই। দলীয় ২১ রানে বিলাসী শট খেলতে গিয়ে ফিরেছেন ৭ রানে। দাওলাত জাদরানের বলে ফেরার পর সেই ধাক্কা সামলে উঠেন এভিন লুইস ও শাই হোপ জুটি।
৮৮ রানের অসাধারণ এই জুটি ভেঙে দিয়েছিলেন লেগ স্পিনার রশিদ খান। ৫৮ রান করা লুইস বিদায় নেন নবীকে ক্যাচ দিয়ে। তাতেও ক্যারিবীয়দের চেপে ধরা যায়নি। হোপ অবশ্য আরও কিছুক্ষণ লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। নতুন নামা হেটমায়ারের সঙ্গে ছোট জুটি গড়ে হুমকি হয়ে উঠলে এই জুটি ভেঙে দেন দাওলাত জাদরান। ৩৯ রানে বিদায় নিতে হয় তখন হেটমায়ারকে।
ততক্ষণে স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তবে আরও বড় স্কোরের তাড়া পেয়ে বসে তাদের। তখন বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আগে হোপকে ৭৭ রানে বিদায় দেন নবী। ৯২ বলে ৭৭ রানে থামেন হোপ।
পরে স্কোরটাকে আরও সমৃদ্ধ করেন অধিনায়ক হোল্ডার ৪টি ছক্কায় ৪৫ রান করে। নিকোলাস পুরানও ছিলেন একই ভূমিকায়। ৪৩ বলে বিদায় নেওয়ার আগে করেন ৫৮ রান। শেষ ওভারে ব্র্যাথওয়েটের মিনি ঝড়ে ৪ বলে করা ১৪ রানে স্কোর ছাড়ায় ৩০০। তাতে তারা পায় ৬ উইকেটে ৩১১ রানের পুঁজি।
আফগান বোলারদের মধ্যে দৌলত জারদান ২টি, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান ও সায়েদ শিরজাদ একটি করে উইকেট শিকার করেন।
৩১২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফিরে যান আফগান অধিনায়ক নাইব। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ১৩৩ রানের জুটি গড়েন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ইকরাম আলি খিল ও রহমত শাহ।
বিশ্বকাপের তৃতীয় কণিষ্ঠতম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিফটি করেন ইকরাম। পরে তিনি গড়েন বিশ্বকাপের কনিষ্ঠতম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৮০ প্লাস রানের ইনিংস খেলার রেকর্ডও। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও তিনি ক্রিস গেইলের ওভারে ধরা পড়েন লেগ বিফোরের ফাঁদে।
আউট হওয়ার আগে ৮ চারের মারে ৯৩ বলে ৮৬ রান করেন ইকরাম। তার আগেই অবশ্য ৬২ রান করে সাজঘরে ফিরে যান রহমত শাহ। এরপর নাজিবউল্লাহ জাদরান ৩১ ও আসগর আফগান ৪০ রান করলে পরাজয়ের ব্যবধানটাই স্রেফ কমাতে পারে আফগানিস্তান।
শেষদিকে খানিক চেষ্টা করেন রশিদ খান। তবে জীবন পেয়েও বেশি কিছু করতে পারেননি তিনি। আউট হয়ে যান ১৬ বলে ৯ রান করে। তবে শিরজাদ আহমেদ খেলেন ১৭ বলে ২৬ রানের ইনিংস। শেষপর্যন্ত আফগানিস্তান নির্ধারত ৫০ ওভার সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৮৮ রান করতে সক্ষম হয়।
উইন্ডিজ বোলারদের মধ্যে কার্লোস ব্রাথওয়েট ৪টি, কেমার রোচ ৩টি, ওশান থমাস ও ক্রিস গেইল একটি করে উইকেট শিকার করেন।
ব্যাট হাতে ৭৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন ক্যারিবীয়ান ব্যাটসম্যান শাই হোপ।
পিবিএ/বাখ