পিবিএ ডেস্কঃ মাইক্রোওয়েভ কী স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক?

আমাদের ঘরে ঘরে বা ফাস্টফুডের দোকানে আজকাল মাইক্রোওয়েভ ওভেন দেখা যায়। শুরু থেকেই মাইক্রোওয়েভ ওভেনের ব্যবহার একটি বিতর্কের বিষয়। মাইক্রোওয়েভ ওভেন প্রস্তুতকারক এটাকে নিরাপদ হিসেবে উল্লেখ করে থাকলেও সাধারণ মানুষ জানতে চায় এর আসলেই কোন ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে কিনা। এতে রেডিয়েশন লিক হবার ভয় যেমন রয়েছে তেমনি এতে খাদ্যের গুণগত মান ঠিক থাকে কিনা এ সংশয়ও রয়েছে।

রেডিয়েশন এবং মাইক্রোওয়েভ

এখন রেডিয়েশন নিয়ে কিছু বলা যাক। মাইক্রোওয়েভ কে নিয়ে সবচেয়ে বড় বিতর্কের বিষয়বস্তু ছিল এই রেডিয়েশন। মাইক্রোওয়েভ ওভেন খাবার রান্না করার জন্য ব্যবহার করা হয় মাইক্রোওয়েভ রেডিয়েশন। মাইক্রোওয়েভ রেডিয়েশন যখন ওভেনের ভিতর আবদ্ধ অবস্থায় থাকে তখন এটা অতটা হানিকারক নয়। তবুও মাইক্রোওয়েভ ওভেনে ইনজুরি হওয়ার ভয় থাকে। আপনি যদি মাইক্রোওয়েভ ওভেনে কখনো মাংস রান্না করে থাকেন তাহলে বুঝতে পারবেন যে এটা আপনার স্কিনের জন্য কতটা মারাত্মক হতে পারে।

মাইক্রোওয়েভ ওভেন সাধারণত সিল করা থাকে যেন বেশিরভাগ রেডিয়েশন লিক না হয়। কিন্তু তারপরও কিছু রেডিয়েশন লিক হবার চান্স থাকে। বাড়িতে ব্যবহৃত ভাল কোম্পানির মাইক্রোওয়েভ ওভেনেও কিছুটা তাপ বাইরে বের হয়ে থাকে। যা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এভাবে দীর্ঘদিন অল্প অল্প রেডিয়েশন গ্রহণ করার ফলে আমাদের দেহে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে যা এখনো গবেষণার বিষয়।

একটা পরীক্ষায় দেখা গেছে রেডিয়েশন লিউকেমিয়ার চান্স বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু আশার বিষয় এই যে পরীক্ষাটা করা হয়েছিল আয়োনাইজিং রেডিয়েশনের উপর আর মাইক্রোওয়েভ সাধারণত নন-আয়োনাইজিং রেডিয়েশন।

মাইক্রোওয়েভ ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখতে হবে এটা ঠিকমতো পরিষ্কার আছে কিনা। মাইক্রোওয়েভ ওভেন কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তা সাধারণত ম্যানুফ্যাক্চার গাইডবুকে দেওয়া থাকে। তা ঠিকমতো ফলো করতে হবে।

মাইক্রোওয়েভ কীভাবে খাবারের মানকে প্রভাবিত করতে পারে

খাদ্যের পুষ্টিমানের উপর মাইক্রোওয়েভের কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া আছে কিনা সেটা একটা বিবেচনার বিষয়। মাইক্রোওয়েভ খাবারের গুণগত মান পরিবর্তন করে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। মাইক্রোওয়েভ খাবারের রাসায়নিক গঠন কিছুটা পরিবর্তন করতে পারে। শিশুদের খাবার মাইক্রোওয়েভে গরম না করাই ভাল। অস্ট্রেলিয়ার এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, মাইক্রোওয়েভ প্রোটিনের গঠন প্রকৃতি পরিবর্তন করে দেয়। তবে মাইক্রোওয়েভের একটা ভাল দিকও রয়েছে যেমন এটা খাদ্যে ব্যাকটরিয়া নির্মূল করার ক্ষেত্রে অধিক উপযোগী। সবসময় মাইক্রোওয়েভ প্রুফ পাত্রে খাবার রান্না করা বা গরম করা উচিৎ। যেকোন প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার গরম করা উচিৎ নয়। এতে প্লাস্টিক থেকে বিভিন্ন কেমিকেল পদার্থ নির্গত হয়ে খাবারকে দূষিত করতে পারে।

মাইক্রোওয়েভ ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন

যদিও মাইক্রোওয়েভের বিকল্প রান্নার ব্যবস্থা আছে তারপরও অনেক সময় দ্রুত রান্না করার জন্য মাইক্রোওয়েভ বিশেষ কাজে লাগে। তাই মাইক্রোওয়েভ ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু টিপ্‌স জেনে নিনঃ

১) মাইক্রোওয়েভ ওভেন ব্যবহারের নির্দেশিকা পড়ুন ও মেনে চলুন।

২) মাইক্রোওয়েভ ব্যবহারকালীন মাইক্রোওয়েভের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবেন না।

৩) প্লাস্টিকের পাত্র বা ব্যাগ মাইক্রোওয়েভে দিবেন না।

৪) লক্ষ্য রাখুন যেন মাইক্রোওয়েভ ওভেনের দরজা ভালো করে সিল করা থাকে এবং সেখানে কোন ময়লা জমে না থাকে।

৫) কী কী খাবার মাইক্রোওয়েভে দেওয়া যাবে বা যাবে না তা আগে জেনে নিন।

৬) যদি মাইক্রোওয়েভের দরজা ড্যামেজ হয়ে যায় বা সিল নষ্ট হয়ে যায় তাহলে কখনোই ব্যবহার করবেন না।