চীনে দৈনন্দিন কেনাকাটায় স্মার্টফোনের মাধ্যমে পেমেন্ট

পিবিএ ডেস্ক: কল্পনা করা যায় কি এমন একটি দিন, যেদিন ভুল করে মানিব্যাগটি বাসায় ফেলে বেরিয়ে পড়েছেন, সাথে নেই কোনো ক্যাশ টাকা পয়সা, নেই ডেবিড/ক্রেডিট কার্ড! কিভাবে চলবেন সারাদিন? আদৌ কি চলা সম্ভব হবে? হয়তো বাধ্য হয়েই বাসায় ফেরত যেতে হবে মানিব্যাগ বা ক্যাশ টাকার জন্য।

চীনে ব্যাপারটি এখন আর সে রকম নেই, ক্যাশ টাকা পয়সা, ডেবিড/ক্রেডিট না থাকলেও আপনার স্মার্টফোনটি যদি সাথে থাকে তাহলে আপনি নিশ্চিন্ত। কাঁচা বাজারে আলু, বেগুন কেনা থেকে শুরু করে বাহিরে খাওয়া দাওয়া, কেনাকাটা, সিনেমা দেখা, ট্যাক্সি ভাড়া, সাইকেল ভাড়া নেয়া সবই সম্ভব হচ্ছে স্মার্টফোন পেমেন্টের মাধ্যমে।

কোন প্রকার নগদ অর্থের বিনিময় ছাড়া শুধু মাত্র QR কোড স্ক্যানের মাধ্যমে সবাই সবার সাথে খুব সহজেই লেনদেন করতে পারছেন, যার কারনে খুব দ্রুতই বদলে যাচ্ছে হাজার বছর ধরে প্রচলিত কাগজ কিংবা ধাতব মুদ্রার মাধ্যমে প্রথাগত লেনদেনের পদ্ধতি।

চীনের প্রধান শহরগুলোতে এখন প্রায় সবাই মোবাইলে লেনদেন করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। Financial Times এর সূত্র মতে চীনে গত বছর মোবাইল পেমেন্টের পরিমাণ ৫.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে যা কিনা আমেরিকার চেয়ে প্রায় ৫০গুন বেশি। QR কোড প্রযুক্তির কল্যানে এটা সম্ভব করেছে চীনা দুই টেক জায়ান্ট কোম্পানি টেনসেন্ট এর Wechat এবং আলিবাবার Alipay। চীনে মোবাইল পেমেন্টের প্রায় ৯০ শতাংশই রয়েছে এই দুই কোম্পানির দখলে।

দৈনন্দিন কেনাকাটা ছাড়াও Wechat ও Alipay দিচ্ছে আরও অনেক বাড়তি সুবিধা, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ, ট্যাক্সি সার্ভিস, খাবার ডেলিভারি, ট্রেন ও বিমানের টিকিট কেনা সহ পাওয়া যাচ্ছে আরও নানাবিধ সেবা। সবই সম্ভব হচ্ছে কোনো প্রকাররের নগদ টাকা পয়সার বিনিময় ছাড়া। শুধুমাত্র নিজের ব্যাংক কার্ডের তথ্য Wechat বা Alipay এ্যাপের সাথে যুক্ত করে দিলেই আপনি নিশ্চিন্ত। নেই এটিএম বুথে গিয়ে টাকা তোলার ঝামেলা অথবা নগদ টাকা সাথে নিয়ে ঘোরাঘুরির চিন্তা।

মূলত ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা, স্মার্টফোনের ব্যাপক ব্যবহার ও এ্যাপগুলো ব্যবহার বান্ধব হওয়ার কারনেই খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে স্মার্টফোনে লেনদেনের এই পদ্ধতি। এভাবে চলতে থাকলে খুব বেশি দেরি নেই যখন নগদ অর্থের লেনদেন হয়ে যাবে সেকেলে। থাকবেনা টাকশালে নোট ছাপানোর ব্যস্ততা। টাইপ রাইটার, ভিসিআর, ফ্লপি ডিস্কের মত কাগজের মুদ্রাও একদিন হয়তো জায়গা করে নেবে জাদুঘরে কিংবা কারও ব্যক্তিগত সংগ্রহশালায়। প্রযুক্তির জোয়ারে ভাসতে ভাসতে আমরাও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শোনাব কাগজের মুদ্রার গল্প।

পিবিএ/এমএসএম

আরও পড়ুন...