আনসার আলইসলামের নারীসহ ২ সদস্য আটক,উদ্ধার ১

পিবিএ,ঢাকা: প্রেম ও বিয়ের ফাঁদে ফেলে জঙ্গি সংগঠনে অন্তর্ভুক্তির দায়ে এক নারীসহ আনসার আল ইসলামের ২ সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব-২। মঙ্গলবার গভীর রাতে বরিশাল শহরে একটি মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগি সাফিয়া আক্তার তানজীকেসহ আনসার আল ইসলামের সক্রিয় নারী সদস্য জান্নাতুল নাঈমা(২২)কে আটক করা হয়।


পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃতের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৯ জুলাই সকাল ৯টা দিকে রাজধানীর ডেমরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার অপর সহযোগী মোঃ আফজাল হোসেন (২৩)কে আটক করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে উগ্রবাদী বই ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ভিকটিম তানজি’কে কথিত প্রেমিকের নিকট বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চট্রগ্রাম থেকে বরিশাল নিয়ে আসা ও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

ভুক্তভোগি তানজী সূত্রে জানা যায়, সে চট্রগ্রামের একটি কলেজে বিবিএ অধ্যয়নরত ছিলো। গত দু’বছর যাবৎ সে পিতা-মাতার সাথে চট্রগ্রাম শহরে বসবাস করছে। সোশ্যাল মিডিয়া অর্থাৎ ফেসবুকে নাঈমাসহ বেশ কয়েকজন মেয়ের সাথে পরিচয় ঘটে। সেখানে একটি গ্রুপে নাঈমা ও অন্য নারী সদস্যদের ফেসবুক বন্ধু বরিশাল নিবাসী সহিফুল সাইফ এর সাথে পরিচয় হয়। নাঈমা ও অন্যান্য মহিলাদের প্ররোচনায় সাইফ এর সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরী হয়। অতঃপর ভুক্তভোগিতানজি তার ফেসবুক বন্ধু নাঈমা ও সহযোগী অন্যান্য নারী-পুরুষ সহযোগীদের প্ররোচণায় সাইফ‘কে বিবাহ করার জন্য গত ২৬ জুন ২০১৯ তারিখে নাঈমার সঙ্গে বরিশালে আসে। বরিশালে আসার পর কথিত প্রেমিক সহিফুল তানজিকে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করে, উক্ত মাদ্রাসায় অবস্থানকালীন সময়ে বিয়ের প্ররোচণায় তাকে জঙ্গিবাদে প্রলুব্ধ করা হয়।

 

গ্রেফতারকৃত জান্নাতুল নাঈমা র‌্যাবকে জানায়, সে চট্রগ্রামের একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। সে ২০১৬ সাল থেকে নিয়মিতভাবে ফেসবুক ব্যবহার করে আসছে। ফেসবুকের একটি গ্রুপে বিভিন্ন নারী সদস্যদের মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে আনসার আল ইসলাম নামীয় জঙ্গি সংগঠনের অর্ন্তভূক্ত হয়। সে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের মহিলা সদস্য বৃদ্ধিতে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালিত করছে। ইতিপূর্বেও সে বেশ কয়েকজন মহিলাকে জঙ্গিবাদে অর্ন্তভূক্ত করেছে।

নাঈমাআরো জানায়, তার সহযোগী অন্যান্য সদস্যদের প্ররোচনায় সাইফ‘কে বিবাহ করার জন্য কুরআন হিফজ করার শর্ত তানজির উপর জুড়ে দেয়া হয়। পূর্ব পরিকল্পনা ও সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নাঈমা কর্তৃক তানজিকে নিয়ে বরিশাল এসে সেখানকার একটি মাদ্রাসায় তাকে কুরআন হিফজ করার জন্য ভর্তি করবে। মাদ্রাসার ভর্তি, থাকা খাওয়া, ভরণ পোষণের দায়িত্ব সাইফ বহন করবে। সে হিসেবে গত ২৬ জুন ২০১৯ তারিখে তানজিকে নিয়ে সে বরিশালে আসে। বরিশালে পৌঁছানোর পর সহিফুল ও নাঈমা কৌশলে তানজিকে নাঈমার আপন বোন পরিচয়ে একই পিতার কন্যা দেখিয়ে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করে। উদ্দেশ্য হলো উক্ত মাদ্রাসায় অবস্থানকালীন নাঈমার তত্ত্বাবধানে তানজিকে জঙ্গিবাদে প্রলুব্ধ করা ও উগ্রবাদী কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত করা।

গ্রেফতারকৃত মোঃ আফজাল হোসেন র‌্যাবকে জানান, সে দীর্ঘদিন ধরে আনসার আল ইসলাম এর সাথে জড়িত। সে বর্তমানে রাজধানী ঢাকার নিকটস্থ একটি এলাকার স্থানীয় সংগঠক। জিজ্ঞাসাবাদে সে সংগঠনের নির্দেশনা অনুসারে মহিলা সদস্যদের দলে অন্তর্ভূক্তি সহ নারী সদস্যদের দ্বারা নাশকতা পরিকল্পনার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছে।

পিবিএ/হক

আরও পড়ুন...