পিবিএ, ঢাকা: রিজেন্ট এয়ারের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটি তার ৪ কর্মীকে বরখাস্ত করেছে ।
রিজেন্ট এয়ারওয়েজের চিফ অপারেটিং অফিসার আশিষ রায় চৌধুরী এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। খবর বিবিসির।
গত ২৭শে জুন স্ত্রীকে সাথে নিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার সময় রিজেন্ট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে বিজনেস ক্লাসে টিকেট কেটেও নির্ধারিত আসন পাননি নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। এ নিয়ে তার করা অভিযোগের পর চার কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করলো রিজেন্ট এয়ারওয়েজ।
যাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন পার্সার, কেবিন ক্রু এবং গ্রাউন্ড স্টাফ।
এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা বলছেন, ওই ফ্লাইটে উঠে নির্ধারিত সিট পাননি মি. তালুকদার।
চিফ অপারেটিং অফিসার মি. চৌধুরী জানান, “তিনি [মি. তালুকদার] গিয়ে দেখেন যে তার জন্য নির্ধারিত সিটে পুলিশের মহাপরিদর্শক বসে আছেন।”
পরে নির্বাচন কমিশনারকে ইকোনমি ক্লাসের সিটে বসানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনাকে ‘সম্মানহানিকর’ উল্লেখ করে মি. তালুকদার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদার কাছে এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ দেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সচিব মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, “ঘটনাটি সম্পর্কে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। নির্বাচন কমিশন বিষয়টি দেখছে।”
এদিকে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কর্মকর্তা মিস্টার চৌধুরী বলেন, “উনি (মি. তালুকদার) যখন ইকোনমি ক্লাসে বসে গেছেন, তখন ক্রু নাকি বলছে, স্যার সিটটা পরিবর্তন করে দিচ্ছি। কিন্তু তখন উনি বলেছেন যে, সেই মুহূর্তে তিনি আর সিট পরিবর্তন করতে চান না।”
এ ঘটনার পর এয়ারওয়েজটির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের কাছে আনুষ্ঠানিক দুঃখ প্রকাশ করার জন্য যোগাযোগ করার কথা জানিয়েছেন এটির কর্মকর্তা আশিষ রায় চৌধুরী।
তিনি বলেন, “উনার কাছে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করতে চাই। কিন্তু উনি আমাদের এখনো সময় দেননি।”
“তিনি [মি. তালুকদার] যেটা বলেছেন সেটা ঠিক। উনি যখন বসে গেছে তখন কেন উনি পরিবর্তন করবেন? আগে কেন তার সিটটা ছিলো না? কেবিন সার্ভিস এবং গ্রাউন্ডে যারা আছে তাদের দায়িত্ব যে উনার সিটটা ঠিক রাখা।”
রিজেন্ট এয়ারওয়েজের অফিসে অভ্যন্তরীণভাবে এ অভিযোগের বিষয়ে এখনো তদন্ত চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, “সবার বক্তব্য শোনা হচ্ছে। এটার একটা কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। আমরা অত্যন্ত দুঃখিত যে এধরণের ঘটনা ঘটেছে।”
তিনি আরো বলেন, “উনার অভিযোগ ঠিক আছে। উনার জায়গায় আমি থাকলে আমিও একই অভিযোগ করতাম। কারণ আমার সিটে অন্য কেউ কেন বসবে?”
“এখানে ফেইলরটা হচ্ছে, পার্সার যে ছিল এবং ক্রু ছিল তার। আর গ্রাউন্ড সার্ভিসের কথা হচ্ছে তাকে নিয়ে গিয়ে অন্য সিটে বসানো হল কেন?”
তবে মি. চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় কোন একক ব্যক্তিকে দোষারোপ করার সুযোগ নেই। কারণ ঘটনাটি আসলে এয়ারওয়েজের অব্যবস্থাপনার কারণে ঘটেছে।
তিনি বলেন, “এখানে ব্যক্তি হিসেবে কাউকে চার্জ করার কথা না। কারণ যিনি ওনার সিটে বসে ছিলেন তিনি তো আর জোর করে গিয়ে বসেননি। উনি কোনদিন বলেনও নি যে, আমাকে এই সিটটা দেন। এটা পুরোপুরি আমাদের মিস ম্যানেজমেন্ট।”
পিবিএ/এএইচ