পিবিএ,কক্সবাজার: কক্সবাজারে সাগর থেকে উপকূলে ভেসে আসা আরও তিন জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে গত দুই দিনে নয় জেলের মৃতদেহ উদ্ধার হলো। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে কক্সবাজার শহরের সমিতিপাড়া, মহেশখালীর হোয়ানক ও রামুর হিমছড়ি সমুদ্র পয়েন্ট থেকে এই তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ওসি জানান, রাতে কক্সবাজার সমিতিপাড়া সমুদ্র পয়েন্টে একজন, মহেশখালী হোয়ানক থেকে একজন এবং রামুর হিমছড়ি থেকে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে বুধবার সকালে শহরের সি-গাল সমুদ্র পয়েন্ট থেকে ছয়জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় ভোলা জেলার চরফ্যাশন এলাকার ওয়াজেদ উদ্দিনের ছেলে জুয়েল (১৭) ও মকবুল আহমদের ছেলে মনিরকে (৩৮) জীবিত উদ্ধার করা হয়। তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
চিকিৎসাধীন মনির জানান, গত ৪ জুলাই (বৃহস্পতিবার) ভোলা চরফ্যাশনের শামরাজ ঘাট থেকে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে ট্রলার নিয়ে তিনি সাগরে যান। তারা মোট ১৪ জন ওই ট্রলারে ছিলেন। গত ৬ জুলাই (শনিবার) ভোরে হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া ও উত্তাল ঢেউয়ের তোড়ে ট্রলারটি থেকে ছিটকে পড়েন তারা। পরে ট্রলারটিও উল্টে যায়। এরপর কে কোথায় হারিয়ে গেছে তা জানা যায়নি। কিন্তু ট্রলার ধরে রাখেন অনেকে। ঢেউয়ের ধাক্কায় ট্রলারটি বারবার উল্টে যায়।
তবুও তারা ট্রলার ধরে রাখার চেষ্টা করেন। ঢেউয়ের ধাক্কায় ট্রলার থেকে ছিটকে পড়ে আবার ধরেন। তবে এই সময় প্লাস্টিকের বেশ কয়েকটি পানির বোতল ড্রামের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন তারা। দুয়েকটি বোতলে পানি রেখে বাকি সব বোতলের পানি ফেলে দেন। এতদিন ওই পানি খেয়ে বেঁচে ছিলেন তারা।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, সাগরে ভেসে আসা ৯ জেলের মধ্যে সাত জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন ভোলার চরফ্যাশনের পূর্ব মাদ্রাসা এলাকার তরিফ মাঝির ছেলে কামাল হোসেন (৩৫), চরফ্যাশনের উত্তর মাদ্রাসা এলাকার নুরু মাঝির ছেলে অলি উল্লাহ (৪০), একই এলাকার ফজু হাওলাদারের ছেলে অজি উল্লাহ (৩৫), মৃত আবদুল হকের ছেলে মো. মাসুদ (৩৮), শহিদুল ইসলামের ছেলে বাবুল মিয়া (৩০) ও নজিব ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩৬), চরফ্যাশনের রসুলপুর এলাকার আসমান পাটোয়ারীর ছেলে শামসুদ্দিন পাটোয়ারী (৪৫)। অপর দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে পড়া ট্রলারটির মালিকের নাম ওয়াজেদ উদ্দিন ওরফে পিটার। তিনি কক্সবাজারে আসার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা শেষে নিহতদের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পিবিএ/টিএ/বিএইচ