পিবিএ, ঢাকা: একাদশ সংসদের নবনির্বাচিত সদস্যরা শপথ গ্রহণ করে কার্যভারগ্রহণ করেছেন। নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পেয়েছেন রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে।
সোমবার (০৭ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটায় বঙ্গভবনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভার শপথ নেবেন। এবার সংসদের সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইন নির্ধারিত উপায়ে এ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে আগামী ফ্রেবুয়ারির মাঝামাঝিতে তফসিল দিয়ে মার্চের মধ্যেই ভোটগ্রহণ করা হবে। দলগুলো যোগ্যতা সম্পন্ন যে কোনো নারীকে মনোনয়ন দিতে পারবেন। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলে রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়নপ্রাপ্তদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করবেন।
২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচনেরও পর সে বছর মার্চে ৫০ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্যই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।
জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন রয়েছে ৫০টি। আইন বলছে, নবনির্বাচিতদের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের পরবর্তী ২১ কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে দল বা জোটগুলো বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের জোটের অবস্থান নির্বাচন কমিশনকে জানাবে। সে মোতাবেক আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে তাদের এ সংক্রান্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে।
নির্বাচন কমিশন সেই তথ্যের ভিত্তিতে দল, বা জোটের দেওয়ার তথ্য অনুযায়ী, কোনো দল বা জোট বা স্বতন্ত্র প্রার্থিদের তালিকা প্রস্তুত করে সংরক্ষিত আসন বন্টন করবে ফলাফলের গেজেট প্রকাশের পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে। অর্থাৎআগামী ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশন এ তালিকা প্রস্তুত করবে। তালিকা প্রস্তুতের পরের কার্যদিবসে অর্থাৎ ১৩ ফেব্রুয়ারি সেই তালিকা নির্বাচন কমিশনের প্রকাশ্য কোনো স্থানে টানিয়ে দেবে। একইসঙ্গে সংসদ সচিবালয়কে সেই তালিকা প্রত্যায়িত কপি টানানোর জন্য বলবে। নির্বাচনের আগে সেই তালিকার আর কোনো পরিবর্তন করা যাবে না। তবে কোনো করণিক ভুল হলে নির্বাচন কমিশন তা সংশোধন করতে পারবে।
এদিকে এর আগেই সংসদ সচিবালয়কে শপথগ্রহণকারী সদস্যদের একটি তালিকা শপথ গ্রহণের তিন কার্যদিবসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ৮ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশনে পাঠাতে হবে। যাদের ভোটার হিসেবে গণ্য করবে নির্বাচন কমিশন। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে সংসদ সদস্যদের তালিকা সংসদ সচিবালয় নির্বাচন কমিশনকে পাঠাবে।
আইন অনুযায়ী, ভোটের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে ১ এপ্রিলে মধ্যে এ নির্বাচন করতে হবে।
জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসন আইন-২০০৪ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন জোটের তালিকা প্রকাশ্যে টানানোর পর এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ করবে। একইসঙ্গে মনোনয়নপত্র দাখিল, বাছাই ও ভোটের দিন ঘোষণা করবে। এছাড়া ভোটগ্রহণের স্থান নির্ধারণ করবে।
আইন অনুযায়ী, কোনো জোট বা দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কে কত আসন পাবে তার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে-জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন হবে আনুপাতিক। এক্ষেত্রে মোট সংরক্ষিত আসনকে জাতীয় সংসদের আসন সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে, সেই ভাগফলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দল বা জোট বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রাপ্ত আসন সংখ্যার গুণফলই হবে ওই দল বা জোট বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সংরক্ষিত মহিলা আসন সংখ্যা।
উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটে ২৯৮টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৫৯ টি, জাতীয় পার্টি ২২ টি, বিএনপি ৫টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩ টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ২ টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ ২ টি, গণফোরাম ২ টি, জাতীয় পার্টি-জেপি ১টি এবং তরিকত ফেডারেশন ১টি আসনে বিজয়ী হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনে ৩ জন স্বতন্ত্র সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
পিবিএ/এসআই