৩০ হাজার টাকায় কসাই ডেকে স্ত্রীকে খুন করাল স্বামী

পিবিএ ডেস্ক: একাধিক পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক সম্পর্ক ছিল স্ত্রীর। সেই পরকীয়ার জেরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রতিনিয়ত অশান্তি লেগেই ছিল। শেষে কসাইকে সুপারি দিয়ে স্ত্রীকে খুন করাল স্বামী। খুনের জন্য নগদ তিরিশ হাজারও দেওয়া হয়। বালি হত্যা রহস্য কাণ্ডে পর্দাফাঁস করল পুলিস।

গত পরশু সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ বালি জেটিয়া হাউসের কাছে গঙ্গার ঘাটে দুটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় মানুষ। কালো রঙের একটি ব্যাগ ও একটি চটের ব্যাগ। কালো রঙের ব্যাগটি খোলা ছিল। তাতে দেখা যায় এক মহিলার কাটা মুন্ডু রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় বালি থানায়। পুলিস এসে উদ্ধার করে ব্যাগ দুটি। দেখা যায়, কালো ব্যাগে রয়েছে কাটা মুন্ডু ও সেইসঙ্গে দেহের উপরের অংশ টুকরো টুকরো করে কাটা। অন্য একটি চটের ব্যাগ থেকে পাওয়া যায় চপার জাতীয় পাঁচটি ধারালো অস্ত্র ও জামাকাপড়।খুনের তদন্তে নেমে পুলিস প্রথমে ভেবেছিল, দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ব্যাগে ভরে কেউ গঙ্গায় ফেলে দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু দুটি ব্যাগ পাওয়া যাওয়ায়, পুলিস নিশ্চিত হয় একসঙ্গে দুটি ব্যাগ ভেসে আসতে পারে না। অর্থাত ব্যাগ দুটি কেউ ফেলে দিয়ে গিয়েছে। সেইসঙ্গে এই ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকার বিষয়েও নিশ্চিত হয় পুলিস। এরপরই মহিলার কাটা মুণ্ডুর ছবি থানায় পাঠানো হয় পরিচয় জানানোর জন্য।

জানা যায়, শিবপুর থানা এলাকার গণেশ চ্যাটার্জি লেনের বাসিন্দা সোনি রজক নামে এক মহিলার নামে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছে। যার সঙ্গে উদ্ধার হওয়া কাটা মুণ্ডর মিল রয়েছে। এরপরই পুলিস পেশায় ধোপা উপেন্দ্র রজককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। ইতিমধ্যে উপেন্দ্র রজক এলাকায় রটিয়ে দিয়েছিল যে, তাঁর স্ত্রী অন্য এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছেন। এদিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উপেন্দ্র রজকের কথায় অসঙ্গতি মেলে।

এরপর পুলিস সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। প্রথমে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়। দেখা যায়, গত পরশু ভোরে হাতে ব্যাগ নিয়ে তিনজন হেঁটে শিবপুর এলাকা দিয়ে যাচ্ছে। এরপর বালিখাল এলাকারও সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়। সেখানেও দেখা যায়, ওই তিনজন ব্যাগসহ রিকশায় চড়ে যাচ্ছে। এরপরই স্বামী উপেন্দ্র রজককে চেপে ধরে পুলিস। লাগাতার জেরার মুখে খুনের কথা কবুল করে সে। পর্দাফাঁস হয় হাড়হিম করা হত্যালীলার।

খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে কসাই দিলওয়ার, নিহতের স্বামী উপেন্দ্র রজক ও শাকিল আহমেদ নামে আরও এক ব্যক্তিকে। খুনে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে ব্যাগের মধ্যে নিহত মহিলার দেহের ওপরের অংশ পাওয়া গেলেও, নীচের অংশ পাওয়া যায়নি। বাকি দেহাংশের খোঁজে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ধৃতদের।

পিবিএ ডেস্ক/ইকে

আরও পড়ুন...