চাকরি ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা আরুক মুন্সির

পিবিএ,ঢাকা: দেখতে অনেকটা বঙ্গবন্ধুর মতো। বুকে সব সময় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে থাকেন। চলাফেরা আচার আচরণে শান্ত স্বভাবের। কথাবার্তায় মিষ্টভাষী। বলছি একজন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক আরুক মুন্সির কথা। সব সময় নিজেকে আড়াল করে রাখতে ভালোবাসতেন তিনি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে নিজেকে আর বেশি আড়াল করে রাখতে পারেননি। রাস্তাঘাটে চলার পথে তাকে দেখেই ছুটে আসেন লোকজন। কাছে গিয়ে বলেন, আপনাকে দেখতে অনেকটা বঙ্গবন্ধু’র মতো লাগে । যদিও নিজেকে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক বলতেই বেশি পছন্দ করেন। রোববার সকালে পিবিএ ( প্রেস বাংলা এজেন্সি)- এর সাথে একান্ত স্বাক্ষাতকারে উঠে আসে আরুক মুন্সির সুখ, দুঃখ, বাংলাদেশকে নিয়ে তার চাওয়া, না পাওয়াসহ তার ব্যক্তি জীবনের অনেক অজানা কথা।

পিবিএ পক্ষ থেকে আরুক মুন্সির কাছে জানতে চাওয়া হয় তার কষ্টের কথা। প্রশ্নটা শুনেই থমকে গেলেন তিনি। উত্তর দিতে গিয়ে চোখটা পানিতে ছলছল করে উঠলো তার। বললেন, বিএনপি জামায়াতের আমলে তার সাথে অন্যায় আচরণের কথা। তিনি বলেন, রাস্তা মেরামতের জন্য ব্যবহার করা হয় ৩০ টনের বল্ডুজার, কিন্তু আমার উপর দিয়ে চালানো হয়েছে ৯০ টনের বল্ডুজার। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিশ্বাস করতাম বলে আমাকে দিয়ে ১৮ ঘন্টা কাজ করানো হতো। কিন্তু দেয়া হতো না ওভারটাইম। আমার কাছ থেকে বেতনের টাকাও কেটে রাখা হতো। ১৫ আগষ্টের বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করার জন্য চাপ দেয়া হতো। কিন্তু আমি কারো কোন চাপের মুখে আমার আদর্শ থেকে সরে যাইনি।

হঠাৎ করে আরুক মুন্সির বুকের কষ্টটা যেনো পাহাড়ের মতো হতে লাগলো। বললেন, বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের সময় তারা আমার সাথে যাই করতো না কেন আমার চাকরিতে কখনো হাত দেয়নি। অথচ বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আমি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছি। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড (ডিপিডিসি) প্রতিষ্ঠানে গাড়ি চালক হিসেবে চাকরি করতেন তিনি। অন্যায়ভাবে ২০১৮ সালে তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, শ্রম আইন লঙ্ঘণ করে আমাকে গত একবছর যাবৎ চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত রাখা হয়েছে। এমনকি আমাকে আমার বাসা থেকেও উচ্ছেদের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তার প্রতি অন্যায় আচরণের একটি উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি হাতিরপুলে পাওয়ার হাউজের যে বাসাতে বসবাস করি সেই ঘরের টিনের চালগুলো নষ্ট, দেয়াল চুইয়ে পানি প্রবেশ করে। আমার ঘর মেরামত করার জন্য আবেদন করি। কিন্তু মেরামতের কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অথচ আমার ঐস্থানে যারা বিএনপির জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত তাদের ঘরগুলো খুব দ্রুত সুন্দরভাবে মেরামত করা হয়েছে। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করছি বলে আমার উপর বর্তমানে প্রশাসনে মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা বিএনপি জামায়াতের কর্মকর্তারা অবিচার করেই যাচ্ছে। তিনি এর সুষ্ট বিচার দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। তিনি বলেন, তদন্ত করে যদি আমার কোন অপরাধ পাওয়া যায় তাহলে আমাকে যে শাস্তিই দেয়া হবে আমি মেনে নিবো।
পিবিএ’র কাছ থেকে আরুক মুন্সির কাছে জানতে চাওয়া হয় কেমন বাংলাদেশ দেখতে চান ?

কোন চিন্তাভাবনা না করেই বলে দিলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা দেখতে চাই। যেখানে কোন হানাহানি থাকবে না। ধর্ম নিয়ে কোন সংঘাত হবে না। সবাই মিলেমিশে থাকবে। বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে সবাই কাজ করে যাবে। তিনি বলেন, ১৫ আগষ্টের বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে পিছনের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর আবারও সোনার বাংলা গড়ার পথে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। বর্তমানে শেখ হাসিনার হাত ধরে উন্নত বাংলাদেশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। বিরামহীনভাবে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। উন্নয়নের কাজগুলোকে সঠিকভাবে সমাপ্ত করতে শেখ হাসিনাকে আরো ক্ষমতায় রাখতে হবে। যাতে যে যে স্থানে কমতি আছে তা পূরণ করতে সময় পান তিনি।
তরুণদের উদ্দেশ্যে আরুক মুন্সি বলেন, তরুণদের বেশি বেশি লেখাপড়ায় মনোযোগ দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু’র সম্পর্কে বেশি বেশি পড়াশোনা করতে হবে। দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে।

পিবিএ/বাখ

আরও পড়ুন...