জেনে নিন, আলঝেইমার এড়াতে কী করণীয়?

পিবিএ ডেস্কঃ শুধু মন সুস্থ রাখা নয়, অ্যালঝাইমার্স ঠেকাতেও এই ডায়েট অনবদ্য৷ প্রবক্তা মার্থা ক্লেয়ার মরিস। ৯২৩ জন বয়স্ক মানুষের উপর প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে গবেষণা করে পেয়েছেন এই তথ্য ৷ যত বেশি দিন ধরে ডায়েট খাওয়া হয়েছে, উপকারের পাল্লা বেড়েছে তত। ‘জার্নাল অব অ্যালঝাইমার্স অ্যান্ড ডিমেনসিয়া’, ‘দ্য জার্নাল অব দ্য অ্যালঝাইমার্স অ্যাসোয়িয়েশন’-এ প্রকাশিত হয়েছে এই তথ্য৷

পুষ্টিবিজ্ঞানে এর পোশাকি নাম ‘মাইন্ড ডায়েট’। বিজ্ঞানীদের মতে, যাঁরা নিয়মিত এই ডায়েট খান, তাঁদের মধ্যে অ্যালঝাইমার ডিজিজের আশঙ্কা প্রায় ৫৩ শতাংশ কমে৷ আর যাঁরা মাঝেমধ্যে খান, তাঁদের কমে প্রায় ৩৫ শতাংশের মতো৷

অর্থাৎ যে অসুখকে নিয়ে চিন্তার শেষ নেই, তাকে কিছুটা হলেও ঠেকানোর হাতিয়ার রয়েছে আমাদের হাতেই। তার উপর মন ভাল থাকার অস্ত্রও এটি। স্ট্রেস–টেনশন–হতাশা কাটাতেও বেশ কাজে আসে। শুধু তা-ই নয়, বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই ডায়েট খেলে রক্তচাপও বশে রাখা সহজ হয়৷ কোলেস্টেরল–ট্রাইগ্লিসের প্রকোপ কম থাকে৷ কাজেই যাঁর এই সব রোগ বা রোগের প্রবণতা আছে, তিনি আরামসে এই ডায়েট খেতে পারেন৷

ওজন বশে রাখতেও এই ডায়েটের ভাল ভূমিকা আছে৷ অতএব ওজন বাড়লে তো বটেই, না বাড়লেও যদি খান, চেহারা নিয়ে আর ভাবতে হবে না৷ উপরি পাওনা হিসেবে পাবেন উজ্জ্বল ত্বক৷ এ সবের সম্মীলিত প্রভাবে মন যেমন ভাল থাকে, তেমনই তরতাজা থাকে হার্ট৷

কী আছে ডায়েটেঃ এই ডায়েট বানানো হয়েছে হার্টের বন্ধু মেডিটেরিয়ান ডায়েট ও রক্তচাপ ঠেকানোর ডায়েট ড্যাশ (ডায়াটারি অ্যাপ্রোচেজ টু স্টপ হাইপারটেনশন)–এর উপকার ছেঁকে৷ কাজেই এখানে যথাসম্ভব প্রাকৃতিক খাবার খেতে হয়৷ বাদ দিতে হয় মিষ্টি, প্রক্রিয়াজাত খাবার, অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও রেডমিট৷ আর ড্যাশ ডায়েটে যেমন খাবারে নুনের পরিমাণ তথা সোডিয়াম কম রাখা হয়, প্রেশার বাড়াতে পারে এমন খাবারদাবারে দাড়ি টানা হয়, এখানেও সেই একই নিয়ম৷ এই ডায়েটে ১০ ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হয়, যেমন:

সব্জি, সবুজ শাক, বেরি— বিশেষ করে ব্লু বেরি, বাদাম, বিন্‌স‌, হোল গ্রেন অর্থাৎ ব্রাউন রাইস, আটা, জোয়ার, বাজরা, রাগি, ওট্স ইত্যাদি। এ ছাড়া মাছ, চিকেন, ডিম, অলিভ অয়েল৷

বাদ দিতে হয় ৫টি অস্বাস্থ্যকর খাবার। যেমন— ভাজাভুজি ও ফাস্ট ফুড, রেড মিট, চিজ, মাখন ও মার্জারিন, ফল বাদে সব রকম মিষ্টি খাবার৷

খাওয়ার নিয়মঃ দিনে কম করে তিন সার্ভিং হোল গ্রেন খান৷ ভাত–রুটি–সিরিয়াল অল্প অল্প করে কমান৷ এবং সাদা চাল বা ময়দার বদলে ব্রাউন রাইস বা আটার রুটি খান, সাদা পাউরুটির বদলে খান ব্রাউন ব্রেড৷ তাও আগে দুটো খেলে এখন খাবেন একটা৷ প্লেট ভরে স্যালাড খান, লেবু বা অল্প অলিভ অয়েল মিশিয়ে৷ বাদ দিন হাই ক্যালোরি ড্রেসিং৷ সব্জি খান রোজ৷ সম্ভব হলে অলিভ অয়েলে সতে করে৷

প্রায় প্রতি দিন কোনও না কোনও বাদাম খান৷ পরিমাণে ২৫ গ্রামের মতো৷

সপ্তাহে ৩–৪ দিন ৩/৪ কাপ বিন্‌স খান৷

ডিম, ৭৫–১০০ গ্রাম চিকেন ও বেরি কম করে সপ্তাহে দু’বার৷

সপ্তাহে অন্তত এক দিন মাছ খান৷ ৭৫–১০০ গ্রাম৷ তৈলাক্ত ও সামুদ্রিক হলে ভাল৷

অস্বাস্থ্যকর খাবার সপ্তাহে এক দিনের বেশি নয়৷

মাখন খান দিনে এক চামচেরও কম৷

পিবিএ/এমআর

আরও পড়ুন...