দৈনিক পাঁচ ঘণ্টা মোবাইল ব্যবহারে নানা সমস্যা

পিবিএ: দিনে পাঁচ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ধরে যেসব শিক্ষার্থী মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, তাঁদের স্থূলতার ঝুঁকি বাড়তে পারে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষকেরা সতর্ক করেছেন, অতিরিক্ত সময় ধরে মোবাইল ফোনের ব্যবহারে অন্যান্য বাজে অভ্যাস তৈরি হয়, যাতে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে। কলম্বিয়ার গবেষকেরা সম্প্রতি এ গবেষণা করেছেন।

কলম্বিয়ার ১৯ থেকে ২০ বছর বয়সী ৭০০ তরুণী ও ৩৬০ জন কিশোর শিক্ষার্থীর ওপর গবেষণাটি চালান সিমন বলিভার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা।

প্রধান গবেষক কলম্বিয়ার ‘সাইমন বলিভার ইউনিভার্সিটি’র মিরারি মানটিলা-মোরোন বলেন, “বিভিন্ন উপযোগিতা, সহজে বহনযোগ্য, অধিক সেবা, তথ্য ও বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে আকর্ষণীয় করলেও জনসাধারণকে মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সঠিক ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পদ্ধতি অনুসরণের বিষয়ে সতর্ক হতে হবে।”

গবেষণায় দেখা গেছে দৈনিক পাঁচ ঘণ্টার বেশি স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ে ৪৩ শতাংশ। আর এই ঝুঁকির পরিমাণ দ্বিগুন হয়েছে যখন অংশগ্রহণকারী ছাত্ররা চিনিযুক্ত পানীয়, ফাস্ট ফুড, মিষ্টি নাস্তা গ্রহণের পাশাপাশি শারীরিক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থেকেছে।

গবেষকরা জানান, ছাত্রদের মধ্যে ২৬ শতাংশই অতিরিক্ত ওজনধারী এবং পাঁচ ঘণ্টার বেশি যারা ডিভাইস ব্যবহার করেছেন তাদের মধ্যে ৪.৬ শতাংশই স্থূল।

গবেষণায় বলা হয়, স্মার্টফোনের সুবিধার জন্য বসে থাকার পাশাপাশি শারীরিক কর্মকাণ্ড কম হয়। ফলে অল্প বয়সে মৃত্যু, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।

ভারতের নদিয়াতে অবস্থিত জায়পি হাসপাতালের অন্ত্রের চিকিৎসক রাজের কাপুর বলেন, “স্মার্টফোন ব্যবহার করা এখন প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে পড়তে হচ্ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।”

তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের গ্যাজেটের ব্যবহারের মাত্রা কমানোই হবে সবচেয়ে ভালো উপায়। পাশাপাশি সোফায় বসে না থেকে শারীরিক কর্মকাণ্ড যেমন ইয়োগা এবং অন্যান্য খেলাধুলা করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।”

ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতালের মনঃচিকিৎসার জ্যেষ্ঠ পরামর্শক আচাল ভাগাত বলেন, “প্রশ্নটা পাঁচ বা আরও বেশি ঘণ্টা ব্যবহারের মধ্যে নয়, বিষয় হচ্ছে জীবনে কতখানি কর্মচঞ্চল থাকা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “যদি পর্যাপ্ত মাত্রায় শারীরিক কর্মকাণ্ডের অভ্যাস গড়ে তোলা না হয় তবে স্থূলতা এবং এই সম্পর্কিত অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির মাত্রা বাড়তে থাকে। আর প্রয়োজনীয় শারীরিক কর্মকাণ্ডে জড়িত না থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে ফোন।”

পিবিএ/ইকে

আরও পড়ুন...