‘লিভ-ইন রিলেশনশিপ’ প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে মেয়ে একসাথে থাকতে …

পিবিএ ডেস্কঃ প্রথমে পরিচয়, তার পর কয়েক বছরের প্রেম, অথবা পছন্দ করে দেওয়া সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্কের পরিণতিতে অবশেষে ছাদনা তলায় পা বাড়ানো। চিরাচরিত এই সামাজিক প্রথার পথে পা মেলাতেই হবে এমন কোনও কথা নেই। সিঙ্গল না থাকলে যে বিয়েতে সায় দিতে হবে, এমনও নয়। ইচ্ছে করলে একা থাকাই যায়, আবার ‘দোকা’ হওয়ার নিয়মেও রয়েছে নানা প্রকারভেদ।

‘লিভ ইন’। আধুনিক দুনিয়ায় খুবই চেনা শব্দ। বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানে বিশ্বাস করেন না এমন মানুষ কম নেই। লিভ ইন–এ যেমন বিবাহিত জীবনের রোজনামচাও মেলে, তেমনই আবার ধরাবাঁধা ছকে বাঁধা না পড়ে স্বাধীন ভাবে মুক্তির স্বাদও নেওয়া যায়। এই প্রজন্মের অনেকই তাই ব্যস্ততার জীবনে বিয়ের চেয়ে লিভ ইন-কে বেশি গুরুত্ব দেন।

তবে হঠকারিতার চোটে লিভ ইন-এর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললে পরে পস্তাতে হয়। তখন ফেরার উপায় থাকলেও জীবন অহেতুক জটিল হয়। তাই সঙ্গী ও আপনি দু’জনেই লিভ ইন করতে চাইলে মনে রাখুন কিছু জরুরি বিষয়। দু’জনেই মেনে চলুন এই ক’টা প্রয়োজনীয় দিক।

কেন লিভ ইন করতে চাইছেন, এর ব্যাখ্যা এক এক জনের কাছে এক এক রকম হতই পারে। তাই দু’জনেই পরস্পরের কাছে নিজেদের ভাবনা ও মত নিয়ে স্বচ্ছ থাকুন। স্রেফ নতুন কিছুর স্বাদ নিতে চেয়ে জীবন নিয়ে পরীক্ষা করবেন না। বরং লিভ ইনের ইচ্ছা ও যুক্তি নিয়ে নিজেদের মধ্যে স্পষ্ট বোঝাপড়া থাকলে তবেই এই পথে পা দিন।

লিভ ইনে থাকতে চাইলে অর্থনৈতিক ও অন্যান্য দায়িত্ব ভাগ ঠিক বিয়ের মতো হয় না। তাই কোন দায়িত্ব কে নেবন, আর্থিক দিকেও কার কতটা অবদান থাকবে সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকুক প্রথম দিন থেকেই। লিভ ইনে থাকার সময়ে যাতে এই নিয়ে কোনও বাড়তি জটিলতা তৈরি না হয়, সে বোধও দু’জনেরই থাকা উচিত।

বাড়িতে পারিবারিক আবহে থাকার সময়ে যে যে সুযোগ-সুবিধা পান, বিয়ের পর সে সব কিছু মেলে না। লিভ ইন তো বিয়ে নয়— এই যুক্তিতে যদি সেখানেও একই সুযোগ সুবিধা পাবেন ভেবে থাকেন, তা হলে সে ভাবনা আপনার মনের ভুল। দায়দায়িত্ব নিয়ে খুব সিরিয়াস না হলে লিভ ইন-এ যাওয়ার কথা ভাববেন না।

বিয়ের পরেও কিছু কিছু অভ্যাস নতুন করে তৈরি হয়, কিছু অভ্যাসে রাশ টানতে হয়। লিভ ইন-এও বিষয়টা তেমনই। তবে ছেড়ে যাওয়ার কোনও আইনি জট এই ধরনের সম্পর্কে থাকে না বলে অনেকেই এ নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। সঙ্গী বা আপনার মনে এমন কোনও নিরাপত্তাহীনতার বোধ থাকলে সিদ্ধান্তের আগে আরও কয়েক বার ভাবুন।

এক সঙ্গে থাকতে শুরু করা মানে কিন্তু অবশ্যই সব কিছু আগের মতোই চলবে এমন নয়। নানা আপস, নানা অপছন্দও সারি বেঁধে এসে দাঁড়াবে খুব পছন্দ আর তীব্র ভালবাসাদের মধ্যেও। লিভ ইন করছেন বলে তাকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে এমন যেমন কোনও কথা নেই, আবার ছেড়ে যেতে কোনও আইনি জট থাকবে না বলে এগুলোকে খুব হালকা চালে নেবেন না এমনও নয়। বরং নিরাপত্তাহীনতা একটা বাড়তি সম্ভাবনা থাকে বলেই লিভ ইনের সময় সঙ্গীর পছন্দ-অপছন্দ, মন, প্রত্যাশা এগুলো বোঝার চেষ্টা করুন মন ও সময় দুই-ই ব্যয় করে।

প্রচণ্ড স্বাধীনচেতা বা কথায় কথায় সম্পর্ক ভেঙে বেরিয়ে যেতে চান, এমন মানুষের সঙ্গে লিভ ইনে জড়াবেন না। তাতে জটিলতা ও অশান্তি বাড়বেই কমবে না।

কোনও সম্পর্কই অত্যধিক ইগো-র কারণে বাঁচে না। লিভ ইনে থাকার সময়ও এ দিকে নজর দিন।

আজকাল লিভ ইন সম্পর্ক নিয়েও নানা আইনি বিষয় তৈরি হয়েছে। লিভ ইন-এ যাওয়ার আগে এই সব আইনের খুঁটিনাটি জেনে তবেই সে পথে পা বাড়ান।

পিবিএ/এমআর

আরও পড়ুন...