চৌহালীতে খোলা আকাশে পরীক্ষা দিচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা

পিবিএ,সিরাজগঞ্জঃ সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার রেহাই মৌশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাকা ভবন যমুনার ভাঙনে বিলীন হওয়ায় শিক্ষার্থীরা
খোলা আকাশের নিচে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা দিচ্ছে।
বোয়ালকান্দি গ্রামের খোলা মাঠে কয়েকটি টিন দিয়ে নির্মান করা ছাপড়া ঘরে ব্রেঞ্চ পেতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। প্রচন্ড গরমের কারনে পরীক্ষা শুরুর দিকে প্রথম শ্রেনীর ছাত্র সজিব ও তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী রাজিয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় চিকিৎসায় তারা এখন সুস্থ।
জানা যায়, রাজশাহী বিভাগের মধ্যে দুর্গম ঘোষিত একমাত্র উপজেলা চৌহালীর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টিকে শিক্ষিত ও আদর্শ- সুশৃঙ্খল জাতি গঠনের প্রয়াসে ১৯৭৩ সালে সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নে যমুনার পূর্বপাড়ে রেহাই মৌশা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পাঁচ কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ভবন ও চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনের ঘর নির্মান করা হয়। বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত প্রায় ৩শ’ শিক্ষার্থীকে ৩ জন শিক্ষক দিয়ে চলে পাঠদান।
গত ১৭ জুলাই যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে বিদ্যালয়ের পাকা ভবন সহ খেলার মাঠ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এরপর বোয়ালকান্দি গ্রামে টিনের ছাপড়া তুলে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থী সহ শিক্ষকদের চরম দুর্ভোগে পড়ে ক্লাস করতে হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার (১আগষ্ট) শুরু হওয়া দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় ১৮২ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। টিনের ছাপড়ায় পরীক্ষার্থীদের স্থান না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীকে রোদের মধ্যে বসেও পরীক্ষায় অংশ নিতে দেখা গেছে। এতে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক ভাবে চরম কষ্ট পোহাতে দেখা গেছে।
দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় অংশ নেয়া পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্র রাকিব হোসেন, সুমি খাতুন ও চতুর্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী জিহাদুল ইসলাম জানান, তীব্র রোধ আর প্রচন্ড গরমে গিঞ্চি পরিবেশে পরীক্ষা দিতে কষ্ট হচ্ছে। একারনে পরীক্ষায় ভাল ফলাফল অর্জন করতে পারব কিনা সন্দেহ। দ্রুত ক্লাস রুম নির্মানে দাবি জানান তারা।
এবিষয়ে কয়েকজন অভিভাবক জানান, খোলা আকাশের নিচে ছেলেমেয়েদের পরীক্ষায় অংশ নিতে কষ্ট হচ্ছে। বিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত টাকা থাকলেও নতুন ভবন নির্মাণে কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথা নেই।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক জাহাঙ্গীর আলম জানান, যমুনা নদীতে বিদ্যালয় ভবন বিলীনের কারণে শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম অসহায় অবস্থায় পড়েছি। প্রায় ১ মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে অসহায় ভাবে কাটাচ্ছি। দ্বিতীয় সামায়িক পরীক্ষায় প্রচন্ড রোদের কারনে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। এ অবস্থায় ভবন নির্মানের দাবি জানাই।
উপজেলা প্রাথমিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুজ্জামান বলেন, নদী ভাঙনের কারনে বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।একারনে পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের কষ্ট করতে হচ্ছে।
এবিষয়ে ইউএনও মুহাম্মদ আবু তাহির জানান, শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাগবে ও শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভবন নির্মানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
পিবিএ/সোহাগ লুৎফুল কবির/ইকে

আরও পড়ুন...