যেভাবে বুঝবেন আপনি কিডনির ক্যান্সারে আক্রান্ত


পিবিএ ডেস্কঃ ক্যান্সার এমন একটি রোগ, যা সঠিক সময়ে ধরা না পড়লে মৃ্ত্যু অবশ্যম্ভাবী ৷ ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। এই রোগ পুরোপুরি নির্মূল করতে পারে এমন কোনও চিকিৎসা এখনও পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি।

এটি এমন কঠিন রোগ যা নিয়ে চিন্তার অন্ত নেই ৷ হঠাৎ করে এই রোগের কথা শুনলে আকাশ থেকে পড়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না ৷ সেই কারণে এই ভয়ানক রোগটি সম্পর্কে আগে থেকে একটু সচেতন হয়ে যাওয়া প্রয়োজন ৷

এর পাশাপাশি কিডনিতে ক্যান্সার হলে কিন্তু চিন্তার কোনও অন্ত থাকে না ৷ কিডনি ক্যান্সারের কিন্তু অনেকগুলি লক্ষণ রয়েছে ৷ আর তা জানান দেয় আপনার কিডনি ক্যান্সার হতে চলেছে বা কিডনি ক্যান্সার হয়েছে ৷ সেই কারণে আগে থেকে জেনে নেওয়া যাক কিডনি ক্যান্সারের কোন কোন লক্ষণ রয়েছে ৷ সেই সম্পর্কে জেনে নিনঃ

পেটে, পেটের উভয়পাশে অথবা নিচের পিঠে ফোলা : কিডনি ক্যান্সারের শুরুটা সম্পর্কে আপনি নাও জানতে পারেন। যেহেতু কিডনি আপনার শরীরের খুব গভীরে অবস্থিত, তাই রোগীরা এ ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে উপসর্গ অনুভব করে না বললেই চলে, বিরল ক্ষেত্রে, কোনও রোগী কিডনি ক্যান্সারের লক্ষণ হিসেবে টিউমার অনুভব করতে পারেন; যদি এমনটা ঘটে তা হলে তিনি সম্ভবত অগ্রসর পর্যায়ে আছেন।

টেস্টে কিছু ধরা পড়ে : এর মানে হল, ক্যান্সারেরটি সব সময় দেরিতে ধরা পড়ে না। লোকজন সম্পূর্ণ অসম্পর্কিত কারণে (যা টিউমার প্রকাশ করে) এমআরআই অথবা আল্ট্রাসাউন্ডের মতো ইমেজিং স্ক্যান করতে পারেন, তাই এসব রোগীর এসব ক্যান্সার খুব ছোট থাকা অবস্থায় নির্ণীত হয়। এটি একটি ভালো বিষয়- প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তকৃত ক্যান্সার অধিক কার্যকরভাবে চিকিৎসা করা যায়।

অল্প পার্শ্ব ব্যথা : কখনও কখনও কোনও রোগী কিডনি ক্যান্সারের একটি লক্ষণ হিসেবে পার্শ্ব ব্যথা অনুভব করতে পারেন। অনবরত পার্শ্ব ব্যথা যা দীর্ঘস্থায়ী ও চলে যায় না তা চিকিৎসক দ্বারা মূল্যায়ন করা উচিত। তবে নিজে নিজে ধারণা করবেন না যে আপনার ক্যান্সার হয়েছে, কারণ অন্যান্য কিছু মেডিক্যাল কন্ডিশনের কারণেও আপনার পেটের উভয়পাশে ব্যথা হতে পারে।

মূত্রে রক্ত : এটি কিডনি ক্যান্সারের কোনও ছোট লক্ষণ নয়, মূত্রে রক্তের উপস্থিতি ভীতিকর। কিন্তু আপনি জানেন না যে, এটি কতটা মারাত্মক বা বিপজ্জনক, কারণ অন্যান্য কিছু সমস্যার (যেমন- মূত্রনালীর সংক্রমণ) কারণেও মূত্রের সঙ্গে রক্ত বের হতে পারে। অথবা হয়তো এটি রক্ত নয়, আপনি হয়তো মূত্র লাল করতে পারে এমন খাবার বেশি খেয়েছেন। কিন্তু যদি কিডনি ক্যান্সারের কারণে মূত্রে রক্তের উপস্থিতি হয়, তাহলে আপনার ক্যান্সার সম্ভবত অধিক অগ্রসর পর্যায়ে আছে, মায়ো ক্লিনিক অনুসারে। এ লক্ষণটি আপনার চিকিৎসক দ্বারা মূল্যায়ন করুন।

ক্লান্তি, ওজন কমে যাওয়া : ক্লান্তি, ক্ষুধা কমে যাওয়া এবং অপ্রত্যাশিত ওজন হ্রাস হচ্ছে কিডনি ক্যান্সারের অগ্রসর পর্যায়ের তিনটি বাড়তি উপসর্গ। কিন্তু এগুলো বিশেষভাবে গোপন। অন্যান্য ফ্যাক্টরও বিবেচনা করুন, যা আপনাকে ক্লান্ত করতে পারে ও ওজন কমাতে প্ররোচিত করতে পারে- এমনকি স্ট্রেসও এ সবের জন্য দায়ী হতে পারে। যদি আপনি ভাল ঘুমনো সত্ত্বেও ক্লান্তির সঙ্গে লড়েন কিংবা কোনও প্রচেষ্টা ছাড়াই ওজন হারাতে থাকেন, তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া সবসময় ভাল সিদ্ধান্ত।

রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া : এতদিন ধরে আপনার রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় ছিল? রুটিন চেকআপে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়েছে? তা হলে এটি কিডনি ক্যান্সারের একটি লক্ষণ হতে পারে। আপনার কিডনি শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং রেনিন নামক হরমোন নিঃসরণ করে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে রাখে- ক্যান্সার এ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারে। আপনার শরীরে অন্যান্য উপসর্গ সম্পর্কে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন যাতে রক্তচাপ বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ জানা যায়।

রক্তাল্পতা : ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনার ক্লান্তির একটি কারণ হতে পারে লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা কমে যাওয়া। কিডনি দ্বারা নিঃসরিত হরমোন এরিথ্রোপয়েইটিন আপনার বোন ম্যারোকে লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে প্ররোচিত করে। আপনার শরীরের অন্যান্য অংশে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য আপনি লোহিত রক্তকণিকার ওপর নির্ভরশীল, যখন তাদের সংখ্যা কমে যাবে আপনার শক্তিও কমে যাবে।

ঠান্ডা, ফ্লু বা অন্যান্য ইনফেকশন ছাড়া জ্বর : যেকোনও সময় শারীরিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি লক্ষণ হতে পারে যে আপনার ইমিউন সিস্টেম কিছু অনধিকারপ্রবেশকারীর সঙ্গে লড়ছে- এটি হতে পারে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া অথবা সম্ভাব্য টিউমার। যদি আপনার রাতে ঘাম হয় অথবা হট ফ্লাশ অনুভব করেন, তা হলে শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করুন। যদি অন্যান্য ইনফেকশনের স্পষ্ট উপসর্গ (কাশি, হাঁচি বা মাংসপেশি ব্যথা- ঠান্ডা ও ফ্লু’র লক্ষণ) ছাড়া জ্বর আসে তাহলে তা চিকিৎসক দ্বারা মূল্যায়ন হওয়া উচিত।

ডান অণ্ডকোষের চারপাশে শিরা ফুলে যাওয়া : আপনার যেকোনও অণ্ডকোষে ক্যান্সারের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে, বিশেষ করে ডান অণ্ডকোষে। ডান অণ্ডকোষে ভ্যারিকোসিল (স্ফীত শিরার গুচ্ছ) হতে পারে বড় কিডনি টিউমারের লক্ষণ, ক্যান্সার ডটনেট অনুসারে। মনের সন্দেহ দূর করতে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

ডান অণ্ডকোষের চারপাশে শিরা ফুলে যাওয়া : আপনার যেকোনও অণ্ডকোষে ক্যান্সারের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে, বিশেষ করে ডান অণ্ডকোষে। ডান অণ্ডকোষে ভ্যারিকোসিল (স্ফীত শিরার গুচ্ছ) হতে পারে বড় কিডনি টিউমারের লক্ষণ, ক্যান্সার ডটনেট অনুসারে। মনের সন্দেহ দূর করতে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

পিবিএ/এমআর

আরও পড়ুন...