বলিরেখা ও বয়সের ছাপ প্রতিরোধে এসেনশিয়াল অয়েল

পিবিএ ডেস্ক: বয়স বৃদ্ধি থেকে কেউই রেহাই পাবেনা। কিন্তু অকাল বার্ধক্যকে এড়ানো সম্ভব। প্রিম্যাচিউর এজিং এর ফলে আপনার ত্বকের তারুণ্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এর ফলে ত্বকে বলিরেখার ছাপ দেখা দেয়, ত্বক ঢিলা হয়ে যায়, চুল সাদা হয়ে যেতে শুরু করে এবং পায়ে ফাটা দেখা দেয়। কেউই চায়না বয়সের এই লক্ষণগুলো খুব তাড়াতাড়ি প্রকাশ পাক। ত্বকের সঠিক যত্ন, স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন, পর্যাপ্ত ঘুম এবং সঠিক খাদ্যগ্রহণ ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও কিছু এসেনশিয়াল অয়েল ত্বকে বয়সের লক্ষণ প্রকাশকে প্রতিরোধ করে। এসেনশিয়াল অয়েলের ঘ্রাণ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে যা অকালবার্ধক্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। চলুন তাহলে জেনে নিই প্রিম্যাচিউর এজিং ঠেকাতে এসেনশিয়াল অয়েলের ব্যবহার সম্পর্কে।

১। নিম এসেনশিয়াল অয়েল

যেহেতু নিমের তেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাংগাল উপাদান থাকে তাই এই তেল ত্বকের ইনফেকশন প্রতিরোধের পাশাপাশি অ্যান্টিএজিং গুনাগুণও প্রকাশ করে। পরিবেশগত বিষাক্ত উপাদানের প্রভাবে ত্বকে বয়স বৃদ্ধির ছাপ পড়ে। নিমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট একে প্রতিহত করতে সাহায্য করে। নিমের তেল রক্ত বিশুদ্ধ হতে সাহায্য করে। ফলে স্বাস্থ্যবান ও দাগহীন ত্বক পাওয়া যায়। নিমের তেলে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ভিটামিন ই থাকে। ১ টেবিলচামচ নিম এসেনশিয়াল অয়েলের সাথে ১ কাপের ৩ ভাগের ১ ভাগ পরিমাণ উষ্ণ অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল মিশান। ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে ৫ মিনিট বৃত্তাকারে ম্যাসাজ করুন। প্রতিদিন এটি ব্যবহার করুন।

২। রোজ এসেনশিয়াল অয়েল

ত্বকের জন্য সবচেয়ে কার্যকরী এসেনশিয়াল অয়েল হচ্ছে রোজ এসেনশিয়াল অয়েল। রোজ এসেনশিয়াল অয়েল চমৎকারভাবে ত্বককে আর্দ্রতা দিতে পারে এবং ত্বককে উজ্জ্বলতা দিতে পারে। এটি সিসাট্রিজেন্ট হওয়ায় ত্বকের যে কোন দাগ দূর করতে পারে এবং অ্যান্টি এজিং এজেন্ট হিসেবেও চমৎকার কাজ করে। এই এসেনশিয়াল অয়েল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ হওয়ায় ফাইন লাইন ও বলিরেখার ছাপ গঠনে বাঁধা দেয়। এছাড়াও এর অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান ত্বকের লাল হয়ে যাওয়া ও ইনফ্লামেশন কমায়। এর কোমল সুগন্ধ স্ট্রেস কমতেও সাহায্য করে। একটি বাটিতে ৩ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল নিন। এর সাথে ১ টেবিল চামচ রোজ এসেনশিয়াল অয়েল মিশান। এই মিশ্রণের অনুপাত যেনো সবসময় ৩:১ হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। তেলের মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে ৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন বৃত্তাকারে এবং সারারাত রাখুন। পরদিন সকালে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তারুণ্যদীপ্ত ত্বকের জন্য প্রতিদিন এটি ব্যবহার করুন।

৩। ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল

সৌন্দর্যচর্চায় এসেনশিয়াল অয়েলের কথা আসলেই ল্যাভেন্ডার অয়েলের নাম প্রথমেই আসে। এটি যেকোন ধরণের ত্বকের জন্যই উপযুক্ত। ফ্রি র‍্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে ত্বককে রক্ষা করার পাশাপাশি সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির ক্ষতি থেকেও ত্বককে রক্ষা করে ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েলের উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়াও ভালো ঘুমকে উৎসাহিত করে ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল যা দাগহীন ও তারুণ্যদীপ্ত ত্বকের জন্য সবচেয়ে ভালো একটি কারণ। ১ আউন্স এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলের সাথে ১০ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার এসেনশিয়াল অয়েল মিশান। আস্তে আস্তে এর পরিমাণ প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়াতে পারেন। সকালে গোসলের পড়ে এই তেলের মিশ্রণ ত্বকে ম্যাসাজ করে লাগান। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও এভাবে এই মিশ্রণ লাগান। সুন্দর ত্বকের জন্য প্রতিদিন এই তেল ত্বকে লাগান।

এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো মনে রাখা প্রয়োজন :

– সব সময় অন্য একটি তেলের সাথে মিশিয়ে তারপর ত্বকে ব্যবহার করতে হয় এসেনশিয়াল অয়েল

– এসেনশিয়াল অয়েলের মিশ্রণ মুখের ত্বকে লাগানোর পূর্বে কোন অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হয় কিনা দেখার জন্য হাতের উল্টো পিঠের ত্বকে লাগিয়ে দেখুন।

– এসেনশিয়াল অয়েলের মিশ্রণ খুব সামান্য পরিমাণে লাগালেই হয়। এটি খুব সহজে চলে যায়না। তাই আঙ্গুলে নিয়ে ত্বকের অল্প জায়গায় লাগিয়ে ম্যাসাজ করতে থাকুন। প্রয়োজনে আবার নিন। কিন্তু একবারে বেশি নেবেন না।

– যেহেতু এসেনশিয়াল অয়েলের মিশ্রণ খুব ঘন হয় তাই এটি যেনো কিছুতেই চোখে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন।

– এসেনশিয়াল অয়েল ঠান্ডা ও অন্ধকার স্থানে রাখুন

– কয়েক ধরণের এসেনশিয়াল অয়েল অন্য একটি তেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

পিবিএ/ইকে

আরও পড়ুন...