পিবিএ গৌরনদী (বরিশাল) : বৃহস্পতিবার ভোরে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ডিগ্রী কলেজের সামনের একটি চাম্বল গাছের সাথে গলায় দড়ি বাঁধা ঝুলন্ত অবস্থায় মোঃ কাওছার হোসেন (২৭) নামের মানসিক ভারসাম্যহীন এক কলেজ ছাত্রের লাশ পাওয়া গেছে।
খবর পেয়ে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে নিহত ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে। নিহত ওই কলেজ ছাত্রের বাড়ি উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ব্রাম্মনগাঁও (ইল্লা) গ্রামে। তার পিতার নাম মোঃ সিরাজ সরদার। তিনি পেশায় গাভীর দুধ বিক্রেতা।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, ভোরে ঘুম থেকে জেগে এলাকাবাসী কলেজের সামনের একটি চাম্বল গাছের সাথে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের লাশ ঝুলতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে লাশের পরিচয় সনাক্ত ও তার স্বজনদের খুজে বের করে।
নিহতের স্বজনরা জানান, উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ব্রাম্মনগাঁও (ইল্লা) গ্রামের তিন সন্তানের জনক মোঃ সেলিম সরদার হাটে বাজারে গাভীর দুধ বিক্রি করে করে স্ত্রীসহ তার ২ ছেলে ও ১ মেয়ের ভরন পোষন এবং লেখাপড়ার খরচ জুগিয়ে আসছিলেন। তার ওই তিন সন্তানের মধ্যে নিহত মোঃ কাওছার হোসেন সবার বড়। সে বার্থী ডিগ্রী কলেজ থেকে ২০১২ সালে এইচ.এস.সি পাস করে সরকারি গৌরনদী কলেজে অনার্সে ভর্তি হয়। এরপর বন্ধু বান্ধবের প্ররোচনায় সে ড্যান্ডির নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত মাত্রায় ড্যান্ডি সেবনের ফলে কিছুদিন যেতে না যেতেই সে মানসিক রোগীতে পরিনত হয়।
নেশার ঘোরে মাঝে মধ্যে সে পিতা-মাতা ও স্বজদের মারধর করত। স্বজনরা তার মানসিক রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি নেশা ছাড়াতে তাকে রিহ্যাবে পাঠায়। এতেও সে নেশা ছাড়তে পারেনি। নেশার জন্য উন্মাদ হয়ে গত ৩/৪ মাস পূর্বে সে বাড়ির পাশের একটি চালতা গাছের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ে। স্বজনরা দেখতে পেয়ে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে। ফলে ওই সময় প্রানে বেচে যায় সে। গত বুধবার সন্ধ্যায় নেশার জন্য উন্মাদ হয়ে সে তার বাবাকে ধারালো দা নিয়ে ধাওয়া করে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ গোলাম সরোয়ার জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার মৃত্যু নিয়ে স্বজনদের মনে কোন সন্দেহ না থাকায় ময়না তদন্ত ছাড়াই তারা নিহতের লাশ নেয়ার জন্য আবেদন করে। ফলে ময়না তদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে তার লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
পিবিএ/খোন্দকার মনিরুজ্জামান মনির/জেডআই